ইতিহাসের পাতায় যুক্ত হচ্ছে ২৩৩ বছরের পুরোনো ‘প্যনি’ কয়েন, আমেরিকায় বন্ধ হতে চলেছে উৎপাদন

আমেরিকার ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শেষ হতে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ ঘোষণা করেছে, ২০২৬ সাল থেকে দেশের সবচেয়ে ছোট মূল্যের মুদ্রা—১ সেন্টের প্যনি (Penny)—আর তৈরি হবে না। ১৭৯৩ সাল থেকে চালু থাকা এই কয়েন অবশেষে তার যাত্রা শেষ করতে চলেছে, অর্থনৈতিক বিবেচনার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে একটি প্যনি তৈরির খরচ প্রায় ৩.৭ সেন্ট, যা তার প্রকৃত মূল্যের চার গুণ। ২০২৪ সালে মোট ৩.১৭ বিলিয়ন প্যনি তৈরি করতে সরকারকে ব্যয় করতে হয়েছে প্রায় ৭১০ কোটি টাকা (৮৫ মিলিয়ন ডলার)। এই খরচকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে ট্রেজারি বিভাগ উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে বছরে প্রায় ₹৪৭৭ কোটি (৫৬ মিলিয়ন ডলার) সাশ্রয় সম্ভব হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এক সরকারি কর্মকর্তা জানান, “আমাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র খরচ কমানো নয়, বরং আরও কার্যকর আর্থিক নীতি চালু করা।”
তবে এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই সিদ্ধান্ত নিলেও বর্তমানে বাজারে চালু থাকা প্রায় ১১৪ বিলিয়ন প্যনি মুদ্রা চলাচল বজায় রাখবে এবং তা বৈধ মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। প্যনি বন্ধ হলেও এর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব অটুট থাকবে। ১৯০৯ সাল থেকে এই কয়েনের উপর প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের প্রতিকৃতি রয়েছে, যা বহু আমেরিকানের আবেগের প্রতীক।
নগদ লেনদেনে সামান্য প্রভাব পড়লেও ডিজিটাল লেনদেনে কোনো পরিবর্তন আসবে না। কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ ইতিমধ্যে এমন মুদ্রা বন্ধ করে মূল্যের রাউন্ডিং চালু করেছে। আমেরিকাও সেই পথেই হাঁটছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি “বাস্তবমুখী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ”।