নীতি আয়োগের বৈঠকে কেন অনুপস্থিত মমতা? তৃণমূল-বিজেপি সংঘাতে নতুন মোড়

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার (২৪ মে, ২০২৫) নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে যোগ দেননি। এই ঘটনা রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে মমতার তরফে বৈঠকে অনুপস্থিতির কারণ জানানো না হলেও, তৃণমূল কংগ্রেসের সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের বৈঠকে মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনার জেরে তিনি এবার অংশ নেননি। গত বছর তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তার বক্তৃতার মাঝে মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, যার কারণে তিনি বৈঠক ত্যাগ করেছিলেন। এবার তিনি পুরোপুরি বৈঠক বয়কট করেছেন।
নীতি আয়োগের এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “রাজ্যের উন্নতি হলেই দেশ উন্নত হবে।” তবে, মমতার অনুপস্থিতি নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “গত বছর মাইক বন্ধ করে মমতাকে অপমান করা হয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে কি তিনি বৈঠকে গিয়ে অপমানিত হতে যাবেন? কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বৈষম্য করছে, এটাই মুখ্যমন্ত্রী তুলে ধরছেন।” তিনি আরও বলেন, “নীতি আয়োগের বৈঠকে সংঘীয় কাঠামোর মাধ্যমে সকলের মতামত শোনার কথা, কিন্তু এমন ঘটনা সেটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।”
অন্যদিকে, বিজেপি এই বয়কটের তীব্র সমালোচনা করেছে। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে রয়েছে। লক্ষাধিক প্রবাসী শ্রমিক ও প্রতিভা রাজ্য ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করা রাজ্যের স্বার্থের পরিপন্থী। মমতা রাজনৈতিক বিরোধিতার জন্য রাজ্যের মানুষের স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছেন।” তিনি দাবি করেন, গত বছরের মাইক বন্ধের অভিযোগ কর্তৃপক্ষ সমর্থন করেনি।
এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মেরুকরণকে আরও তীব্র করেছে। তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্র সরকার রাজ্যের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে, যা মমতা বারবার তুলে ধরছেন। অন্যদিকে, বিজেপি মনে করে, মমতার এই পদক্ষেপ রাজ্যের উন্নয়নের সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।