BNS-152 বনাম আইপিসি 124এ: মতপ্রকাশ নাকি রাষ্ট্রদ্রোহ? জানুন বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ

BNS-152 বনাম আইপিসি 124এ: মতপ্রকাশ নাকি রাষ্ট্রদ্রোহ? জানুন বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ

নতুন ভারতীয় বিচার সংহিতা, অর্থাৎ BNS-2023-এর ধারা ১৫২ এবং ঔপনিবেশিক আমলের রাষ্ট্রদ্রোহ ধারা ১২৪এ—এই দুই ধারার মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে বলে মনে করছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় আইন বিশেষজ্ঞরা। স্বাধীন ভারতে নতুনভাবে প্রস্তাবিত এই ধারা দেশবিরোধী কার্যকলাপ ও বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করলেও, এটি মতপ্রকাশের অধিকার বা রাজনৈতিক ভিন্নমতের ওপর নিষেধাজ্ঞা নয় বলে তারা দাবি করেছেন।

বিশিষ্ট আইনজ্ঞ রাকেশ দ্বিবেদী, জ্ঞানন্ত সিংহ, অভিষেক রায় ও অনুপম মিশ্র একবাক্যে বলেছেন, “ধারা ১৫২ এবং রাষ্ট্রদ্রোহ ধারা ১২৪এ-এর মধ্যে কোনোরকম তুলনা অযৌক্তিক। নতুন ধারা জনসাধারণের স্বাধীনতা রক্ষা করেই রাষ্ট্রের অখণ্ডতা রক্ষায় কার্যকর।” তাদের মতে, ১৮৭০ সালে ব্রিটিশ সরকার রাষ্ট্রদ্রোহ ধারা চালু করেছিল সরকারবিরোধী যেকোনো মতকে দমন করার উদ্দেশ্যে, যার শিকার হয়েছিলেন তিলক, গান্ধী, আজাদ, এমনকি সাংবাদিকরাও।

BNS-এর ধারা ১৫২-এ বলা হয়েছে, কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে লিখিত, মৌখিক বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপকে উসকানি দেয় বা ভারতের সার্বভৌমত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। তবে এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করার হাতিয়ার নয়, বরং রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী রায় এবং গণতান্ত্রিক অধিকার সংক্রান্ত নির্দেশনাগুলিকে মাথায় রেখেই ধারা ১৫২ রচিত হয়েছে। তবে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব’ বা ‘ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ’-এর সংজ্ঞা আরও স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন বলে তারা মনে করছেন। ভবিষ্যতে এই বিষয়গুলি বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যাখ্যাত হবে বলেও মত দিয়েছেন তারা। তাদের বক্তব্য, “BNS-152 রাষ্ট্রদ্রোহ নয়, এটি জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *