ডাঃ অমিত কুমারের নৃশংস কিডনি পাচার: ৭৫০ কিডনি বিক্রি, কোনো ভারতীয়ের জন্য নয়

‘ডক্টর ডেথ’ নামে কুখ্যাত ডাঃ দেবেন্দ্র শর্মার গ্রেপ্তারের পর তাঁর প্রধান ডাঃ অমিত কুমারের নৃশংসতা প্রকাশ পেয়েছে। সাত বছর ধরে তিনি প্রায় ৭৫০টি কিডনি অবৈধভাবে পাচার করেছেন, কিন্তু একটিও ভারতীয়দের জন্য ব্যবহার করেননি। তিনি বিদেশি ক্লায়েন্টদের লক্ষ্য করে গরিব ও আদিবাসীদের লোভ দেখিয়ে তাদের কিডনি সংগ্রহ করতেন এবং উচ্চ মূল্যে বিদেশিদের কাছে বিক্রি করতেন। উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা অমিত কুমারের আয়ুর্বেদে বিএএমএস ডিগ্রি ছিল। তবে বড় স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি অবৈধ অঙ্গ পাচারে জড়ান। তিনি জানতেন, মধ্যবিত্তদের কিডনি সংগ্রহ করলে ধরা পড়ার ঝুঁকি বেশি। তাই তিনি দরিদ্র ও আদিবাসীদের টার্গেট করতেন।
তিনি বড় হাসপাতালে গুপ্তচর রেখেছিলেন, যারা তাকে বিদেশি ক্লায়েন্টদের তথ্য সরবরাহ করত। অমিত কুমার সিবিআই-কে জানিয়েছিলেন, তিনি বিদেশিদের ৪০-৫০ লাখ টাকায় কিডনি প্রতিস্থাপন করতেন, যেখানে বড় হাসপাতালে খরচ ৫০-৬০ লাখ টাকা। এতে তিনি প্রতি ক্ষেত্রে ৩০-৩৫ লাখ টাকা লাভ করতেন। দাতাদের ৩০-৩৫ হাজার টাকা দিয়ে তিনি তাদের মুখ বন্ধ করতেন। তিনি দিল্লি-এনসিআরে একাধিক গেস্টহাউসকে হাসপাতাল ও ল্যাবে রূপান্তরিত করেছিলেন। ফরিদাবাদ ও গুরুগ্রামে ডাঃ উপেন্দ্রের সঙ্গে তিনি কিডনি সংগ্রহ ও প্রতিস্থাপন করতেন। দিল্লি ও গ্রেটার নয়ডায়ও তিনি এমন ল্যাব স্থাপন করেছিলেন।
অমিত কুমারের এই র্যাকেট ২০০৮ সালে গুরুগ্রামে প্রকাশ্যে আসে, যখন পুলিশ তাঁর স্টার ম্যাক্স হাসপাতালে অভিযান চালায়। তিনি নেপালে পালিয়ে যান, কিন্তু পরে সিবিআই তাঁকে প্রত্যর্পণ করে। ২০১৩ সালে সিবিআই আদালত তাঁকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ৬০ লাখ টাকা জরিমানা করে। তবে, বেল পেয়ে তিনি পুনরায় অবৈধ কার্যকলাপ শুরু করেন। ২০১৭ সালে দেহরাদুনে তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর এই অপরাধ ভারতের অঙ্গ পাচারের অন্ধকার দিক তুলে ধরে।