বাংলাদেশ-চিনের হুমকির জবাবে ভারতের ‘ত্রিদেব’, উত্তর-পূর্বে ৫০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ

বাংলাদেশ-চিনের হুমকির জবাবে ভারতের ‘ত্রিদেব’, উত্তর-পূর্বে ৫০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এএলএম ফজলুর রহমানের সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্টে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যে চিনের সঙ্গে যৌথ সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তাব ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। তিনি বলেছিলেন, “ভারত যদি পাকিস্তানে হামলা করে, বাংলাদেশের উচিত উত্তর-পূর্ব ভারত দখল করা।” এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস চিন সফরে গিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ‘স্থলবেষ্টিত’ উল্লেখ করে চিনকে এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ার আমন্ত্রণ জানান। এই মন্তব্য ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষত সিলিগুড়ি করিডোরের কাছে লালমনিরহাটে চিন-সমর্থিত বিমানঘাঁটি পুনঃস্থাপনের খবরে। এই করিডোর ভারতের আটটি উত্তর-পূর্ব রাজ্যকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে।
ভারত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশি পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যা তাদের টেক্সটাইল শিল্পে ব্যাঘাত ঘটাবে। পাশাপাশি, ‘রাইজিং নর্থইস্ট ইনভেস্টরস সম্মেলন’-এ ভারতের ‘ত্রিদেব’—অদানি গ্রুপ, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং বেদান্ত গ্রুপ—উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৩০,০০০-৫০,০০০ কোটি টাকার অতিরিক্ত বিনিয়োগ ঘোষণা করেছে। রিলায়েন্সের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি বলেন, “আগামী পাঁচ বছরে আমরা ৭৫,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করব, যা গত ৪০ বছরের ৩০,০০০ কোটি টাকার দ্বিগুণেরও বেশি।” এই বিনিয়োগ টেলিকম, স্বাস্থ্য, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি এবং ক্রীড়া অবকাঠামোর উপর কেন্দ্রীভূত হবে।

অদানি গ্রুপ ১০ বছরে ১ লক্ষ কোটি টাকা এবং বেদান্ত ৮০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার মধ্যে আসামে ৫০,০০০ কোটি টাকা আগেই ঘোষিত। বেদান্তের চেয়ারম্যান অনিল আগরওয়াল বলেন, “এই বিনিয়োগ তেল, গ্যাস, খনিজ, বিদ্যুৎ এবং ডেটা সেন্টারে ১ লক্ষ চাকরি সৃষ্টি করবে।” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্মেলনে বলেন, “উত্তর-পূর্ব ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির কেন্দ্রবিন্দু, এটি এশিয়ান বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হবে।” এই বিনিয়োগ ও নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ-চিনের কৌশলের বিরুদ্ধে ভারতের শক্তিশালী জবাব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *