কেরল উপকূলে লাইবেরিয়ান মালবাহী জাহাজ ডুবি, তেল ফুটোতে রাজ্যে সতর্কতা জারি

কেরল উপকূল থেকে প্রায় ৩৮ সামুদ্রিক মাইল দূরে একটি লাইবেরিয়ান মালবাহী জাহাজ ‘এমএসসি ইলসা ৩’ রবিবার সকালে ডুবে গেছে। জাহাজে মোট ৬৪০টি কনটেইনার ছিল, যার মধ্যে ১৩টি ছিল বিপজ্জনক রাসায়নিকসহ। ডুবির ফলে ব্যাপক তেল ফুটো হয়েছে, যা পরিবেশ ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে।
কেরল সরকার পুরো রাজ্যে অ্যালার্ট জারি করেছে এবং মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় কোস্ট গার্ড তেল ফুটো রোধে কাজ করছে এবং জরুরি প্রস্তুতিও চালাচ্ছে। জাহাজে থাকা ২৪ সদস্যের সবকেই উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন রাশিয়ার একজন, ২০ জন ফিলিপিনো, দুইজন ইউক্রেনিয়ান ও একজন জর্জিয়ান।
তেল ও বিপজ্জনক রাসায়নিক ফুটো, পরিবেশের ওপর গভীর প্রভাব
কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, জাহাজে ছিল ৮৪.৪৪ মেট্রিক টন ডিজেল ও ৩৬৭.১ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল। পাশাপাশি কনটেইনারে ছিল ক্যালসিয়াম কার্বাইড, যা সামুদ্রিক জলের সংস্পর্শে অত্যন্ত জ্বলনশীল এসিটিলিন গ্যাস উৎপন্ন করে। এটি কেরলের জীববৈচিত্র্য ও পর্যটন ক্ষেত্রের জন্য বিশেষ হুমকি।
সরকারি বৈঠকে জানানো হয়েছে যে ফুটে যাওয়া তেল প্রায় তিন কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতি দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে, যা পরিবেশ এবং নৌ চলাচলের জন্য বিপদসঙ্কেত। কোস্ট গার্ড দুইটি জাহাজ ও একটি Dornier বিমান ব্যবহার করে তেল ছড়িয়ে পড়া রোধে বিশেষ ধরনের ছিটানো কাজ চালাচ্ছে।
জনসাধারণকে সতর্কবার্তা ও ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি
কেরল সরকারের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন জনসাধারণকে ২০০ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে এবং অপরিচিত কনটেইনার বা তেল ফুটো দেখা মাত্রই ১১২ নম্বরে রিপোর্ট করতে বলেছে। মৎস্যজীবীদের ডুবন্ত জাহাজের ২০ সামুদ্রিক মাইলের মধ্যে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিবেশগত প্রভাব নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং সব প্রয়োজনে জরুরি পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী।
কেরল রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষও জনসাধারণকে তেল ফুটো বা কনটেইনার স্পর্শ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছে। পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীদের সাথে সমন্বয় করে পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর আছে কর্তৃপক্ষ।