ঘরোয়া হিংসার শিকার সবচেয়ে বেশি স্বামী, ভারতের অবস্থান চমকপ্রদ: জাতিসংঘের রিপোর্ট

ঘরোয়া হিংসার শিকার সবচেয়ে বেশি স্বামী, ভারতের অবস্থান চমকপ্রদ: জাতিসংঘের রিপোর্ট

ঘরোয়া হিংসার প্রসঙ্গে সাধারণত ধারণা থাকে যে, শুধুমাত্র নারীই এর শিকার হন এবং পুরুষরাই এই সহিংসতার কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জাতিসংঘের সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট এই ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, অনেক দেশে স্ত্রীরা ঘরোয়া হিংসার দায়ী হলেও শিকার হচ্ছেন পুরুষরাই, বিশেষ করে স্বামীরা। আশ্চর্যের বিষয়, এই তালিকায় ভারত তৃতীয় স্থানে রয়েছে, যেখানে স্বামীদের বিরুদ্ধে স্ত্রীদের মারধরের ঘটনা দ্রুত বেড়েই চলেছে।

জাতিসংঘের অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য অনুযায়ী, স্বামীদের সবচেয়ে বেশি ঘরোয়া হিংসার শিকার হতে হয় মিশরে। মিশরের ফ্যামিলি কোর্টের তথ্য মতে, ৬৬ শতাংশ স্বামী যারা ঘরোয়া হিংসার শিকার, তারা ডিভোর্সের জন্য আবেদন করেন। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে যুক্তরাজ্য এবং তৃতীয় স্থানে ভারত রয়েছে। ভারতীয় সমাজে যেখানে সাধারণত পুরুষকে সবসময় শক্তিশালী হিসেবে দেখা হয়, সেখানে এই পরিসংখ্যান সত্যিই আশ্চর্যজনক।

সাধারণ ভাবনা হল, ঘরোয়া হিংসা মানে স্বামী দ্বারা স্ত্রী নির্যাতন। কিন্তু এই রিপোর্ট প্রমাণ করেছে, হিংসা লিঙ্গ বিবেচনা করে না। নারীরাও নিজেদের স্বামীদের ওপর শারীরিক হিংসা প্রয়োগ করতে পারেন, যা অনেক সময় রাগ, নিয়ন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষা কিংবা মানসিক চাপের ফল। এই বিষয়টি নিয়ে সমাজে তেমন আলোচনার অভাব থাকায় পুরুষরা নীরবে নির্যাতন সহ্য করে চলেছেন।

জাতিসংঘের গুডউইল অ্যাম্বাসেডর এমা ওয়াটসন বলেছেন, “যদি আমরা সত্যিই জেন্ডার সমতার পথে এগোতে চাই, তাহলে বুঝতে হবে হিংসা কোনও এক লিঙ্গের সমস্যা নয়। নারী ক্ষমতায়ন মানে পুরুষকে দুর্বল করা নয়, বরং সবার সমান অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।” তিনি আরও বলেন, “ঘরোয়া হিংসার বিরুদ্ধে লড়াই তখনই সফল হবে, যখন পুরুষদের বিরুদ্ধে হিংসাকেও গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।”

এখন সময় এসেছে মনোভাব বদলের। সমাজকে মানতে হবে যে পুরুষরাও ঘরোয়া হিংসার শিকার হতে পারে এবং তাঁদের সাহায্য, সহানুভূতি ও ন্যায় প্রাপ্য ঠিক তেমনি যেমন নারীদের। ভারতে যেখানে পুরুষদের সবসময় শক্ত থাকার চাপ থাকে, সেখানে তাঁদের যন্ত্রণাকে বুঝতে ও শোনার জোরালো প্রয়োজন। জেন্ডারের দুই দিককেই সমানভাবে বিচার করার সময় এখনই এসেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *