কেরালের “চকোলেট মন্দির”: শিশুদের প্রিয় আর্শীবাদের স্থান

কেরালের “চকোলেট মন্দির”: শিশুদের প্রিয় আর্শীবাদের স্থান

ভারত তার বৈচিত্র্য এবং অনন্য ধর্মীয় প্রথার জন্য পরিচিত। প্রতিটি রাজ্য ও প্রতিটি মন্দিরের নিজস্ব বিশেষত্ব থাকে। এর মধ্যে কেরালের পালক্কাড জেলার থেক্কন পালানি শ্রী বালসুব্রহ্মণ্যম মন্দির একটি বিশেষ প্রচলনের জন্য বিখ্যাত, যা ভক্ত এবং পর্যটক উভয়ের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে ভক্তরা ভগবান মুরগনকে বিভিন্ন ধরনের চকোলেট উৎসর্গ করেন এবং পরে পুরোহিতরা সেই চকোলেটগুলোকে আশীর্বাদ দিয়ে ‘চকোলেট প্রসাদম’ হিসেবে ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করেন।

এই অনন্য প্রথার কারণে মন্দিরটি বহু দূর-দূরান্ত থেকে মানুষের নজর কেড়ে নিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এই প্রচলন কয়েক বছর আগে শুরু হলেও ধীরে ধীরে এটি মন্দিরের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। এখন ভক্তরা যখনই মন্দিরে যান, মুরগনকে চকোলেট উৎসর্গ করা ভুল করেন না। বিশেষত শিশুরা মন্দিরের প্রতি আকৃষ্ট হয়, কারণ তারা প্রিয় দেবতার ‘মিষ্টি’ আশীর্বাদ চকোলেট হিসেবে পান। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানায়, এর পেছনে কোনো পুরানো পৌরাণিক কাহিনী বা শতাব্দী প্রাচীন রীতি নেই।

অনন্য বিশ্বাসের এক নিদর্শন
থেক্কন পালানি মন্দিরে ভগবান মুরগনকে ‘বাল মুরগন’ অর্থাৎ শিশুরূপে পূজা করা হয়। এই কারণে তাদের পছন্দের বস্তু, অর্থাৎ চকোলেট, উৎসর্গ করা হয়। ভক্তরা বিভিন্ন ধরনের চকোলেট নিয়ে আসেন এবং মন্দিরে ভগবানের পদতলে নিবেদন করেন। বিশ্বাস করা হয় যে প্রথমে এক ভক্ত তার ভক্তি ও ভালোবাসা প্রকাশ করতে চকোলেট উৎসর্গ করেছিলেন, যা পরবর্তীতে অন্যান্যরাও অনুসরণ করেন। এইভাবেই ধীরে ধীরে এটি মন্দিরের একটি স্বতন্ত্র প্রথা হয়ে দাঁড়ায়।

চকোলেট প্রসাদম ও আধুনিকতার সঙ্গম
থেক্কন পালানি বালসুব্রহ্মণ্যম মন্দিরে ভগবান মুরগনের মূর্তি ও দানপাত্রে বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও স্বাদের চকোলেট দেখা যায়। পূজা ও আরতির পর এসব চকোলেট ছোট প্যাকেটে ভরে ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। স্থানীয়দের বিশ্বাস, মুরগনকে চকোলেট উৎসর্গ করলে শিশুদের মনোকামনা পূরণ হয় এবং পরিবারে শান্তি বজায় থাকে।

এই বিশেষ প্রথা মন্দিরটিকে কেরালের অন্যতম জনপ্রিয় ও পরিচিত মন্দিরে পরিণত করেছে। শুধু স্থানীয় নয়, দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে এসে এই অদ্ভুত প্রথার সাক্ষী হন। এটি আধুনিকতা ও ভক্তির অনবদ্য মিশ্রণ হিসেবে খ্যাত। যারা মন্দিরে যান, তারা ‘চকোলেট প্রসাদম’ পেয়ে একটি মিষ্টি ও অনন্য অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে আসেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *