৪ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত ভারত, কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্যে কী পরিবর্তন?

৪ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত ভারত, কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্যে কী পরিবর্তন?

ভারত এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে পরিচিত, যেটি সম্প্রতি ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের জিডিপি ছাড়িয়ে গেছে। নীতি কমিশনের সিইও বিএভিআর সুব্রহ্মণ্যম বলেছিলেন যে বৈশ্বিক এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন ভারতের পক্ষে অনুকূল। তবে কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনেত এই উন্নয়নের সুফল সাধারণ মানুষের মধ্যে পৌঁছাচ্ছে না বলে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিগুলোর সমালোচনা করেছেন।

তিনি বলেন, “আমরা জাপানকে পেছনে ফেলে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হয়েছি, যা ভালো কথা। তবে বাস্তবতা কিছু ভিন্ন। আমাদের দেশের গড় আয় মাত্র ২৮০০ মার্কিন ডলার, যেখানে জাপানের ৩৩০০০ এবং যুক্তরাজ্যের ৫৫০০০ ডলার। অর্থাৎ ব্যক্তিগত আয় অনেক কম, যা আমাদের উন্নয়নের বড় বাধা।” তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রতি ব্যক্তির আয়ে ভারত ১৩৬ নম্বরে, যেখানে বাংলাদেশের মতো দেশ আমাদের পাশেই এবং কঙ্গো, পাকিস্তানের মতো দেশও পিছিয়ে।

অর্থনৈতিক বৃদ্ধির তুলনা ও সাধারণ মানুষের বাস্তবতা
২০০৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ভারতীয় ব্যক্তিগত আয়ের বৃদ্ধির গতি নীতির উপর নির্ভরশীল। ইউপিএ শাসনামলে ব্যক্তিগত আয় ২.৬৪ গুণ বাড়লেও এনডিএ শাসনামলে তা মাত্র ১.৮ গুণ। সুপ্রিয়া শ্রীনেত বলেন, “ইউপিএ আমলে গড় অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৫%, কিন্তু এনডিএ আমলে তা ৬.৫% ছাড়ায়নি।”

তারা বলেন, “ভারতের ৮০ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা আজও চ্যালেঞ্জ। ব্যাংক থেকে স্বর্ণ ঋণ নেওয়া মানুষের সংখ্যা ৭১% বেড়েছে, সঞ্চয় কমেছে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে খরচ কমেছে। আমজনতা ক্রমশ আর্থিক সংকটে, যা আত্মহত্যার হার বাড়াচ্ছে।”

সরকারের সাফল্যের মাস্কের আড়ালে বেকারত্ব, দারিদ্র্য ও মূল্যবৃদ্ধি
সুপ্রিয়া শ্রীনেতের মতে, “৪র্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়া গর্বের বিষয়, কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবনে তার কোনো স্পষ্ট প্রভাব পড়েনি। বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক সমস্যা সরকারের চোখ বন্ধ করে মুখোশের মতো সফলতার ছড়াছড়ি।” তিনি দাবি করেন, সরকারি নীতি শুধু ধনী ও শক্তিধরদের আরও সমৃদ্ধ করছে, আর গরিব ও কৃষকদের ভাগ্য বিপন্ন করে তুলেছে।

এই অবস্থায় তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন—“এই অর্থনৈতিক সাফল্যের সুফল গরিব, কৃষক ও বেকারদের কেন পৌঁছাচ্ছে না?”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *