জোড়া তারায় অদ্ভুত চৌম্বক শক্তি, বিজ্ঞানীদের ধারণা ভাঙল নতুন গবেষণা

জোড়া তারায় অদ্ভুত চৌম্বক শক্তি, নতুন তথ্য দিল গবেষণা
বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে নতুন এক গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে জোড়া তারার (বাইনারি স্টার) চৌম্বক শক্তি নিয়ে চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। সাধারণত, কোনো তারা যত দ্রুত ঘোরে, তার চৌম্বক ক্ষেত্র তত শক্তিশালী হয়—এমনটাই মনে করা হতো। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ড. জি ইউ-এর নেতৃত্বে এক গবেষক দল দেখিয়েছেন, কাছাকাছি অবস্থানে ঘূর্ণনরত জোড়া তারায় এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। ড. ইউ বলেন, “এখানে চৌম্বক শক্তি ‘স্যাচুরেশন লিমিট’ ছাড়িয়ে যায়, যা আমাদের পূর্বধারণার বাইরে।”
‘সুপারস্যাচুরেশন’ রহস্য
গবেষণায় ব্যবহৃত হয়েছে চীনের ল্যামোস্ট টেলিস্কোপ ও ইউরোপীয় মহাকাশ এজেন্সির গাইয়া ডেটা। দেখা গেছে, কিছু জোড়া তারা এত দ্রুত ঘোরে যে ১২ ঘণ্টারও কম সময়ে একবার ঘূর্ণন সম্পন্ন করে। আশ্চর্যের বিষয়, এদের চৌম্বক শক্তি বাড়ার বদলে কমতে শুরু করে—একে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন ‘সুপারস্যাচুরেশন’। “এটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত,” বলেছেন গবেষণার সহযোগী ড. মাইকেল হ্যাচিংস। বিজ্ঞানীদের মতে, দুটি তারার মধ্যকার মহাকর্ষীয় টান ও জোয়ার-ভাটার শক্তি এই অস্বাভাবিক আচরণের জন্য দায়ী।
মহাকাশে প্রাণের সম্ভাবনায় প্রভাব
এই গবেষণার ফলাফল শুধু জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য নয়, প্রাসঙ্গিক মহাজাগতিক বাসযোগ্যতা নিয়েও। তীব্র চৌম্বক ক্ষেত্রের কারণে কাছাকাছি থাকা গ্রহগুলোর বায়ুমণ্ডলে উচ্চশক্তির রশ্মি আঘাত করতে পারে, যা প্রাণের অস্তিত্বকে দুরূহ করে তোলে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ জার্নালে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মহাবিশ্ব এখনও আমাদের জন্য রেখে দিয়েছে অজস্র রহস্য।