আফগানদের জন্য ভিসা চালু, পাকিস্তান নিষিদ্ধ – ভারতের বিদেশনীতির নতুন অভিমুখ

শ্রীনগর হামলার পর থেকেই ভারতের কঠোর অবস্থানে ছিল পাকিস্তান। ভিসা পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য। তবে, এই পরিস্থিতিতে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে ভারতের বিদেশনীতিতে, যেখানে আফগানিস্তানের নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপ ভারতের কৌশলগত স্বার্থ এবং আফগানিস্তানে তালিবানের সঙ্গে সম্পর্কের সাম্প্রতিক উন্নতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ভারত সরকার ‘নিউ আফগান ভিসা’ মডিউলের অধীনে এই পরিষেবা চালু করেছে। প্রাথমিকভাবে, চিকিৎসার জন্য ভারতে আসতে ইচ্ছুক রোগী এবং তাদের পরিচর্যাকারীরা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী এবং জাতিসংঘের কূটনীতিক ভিসায় আসা ব্যক্তিরাও প্রবেশাধিকার পাবেন। প্রতিটি আবেদনের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্রভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আফগান নাগরিকদের ভিসা আবেদনের জন্য একটি ছবি, পাসপোর্টের বিবরণ এবং একটি অতিরিক্ত আইডি কার্ড পোর্টালে জমা দিতে হবে।
এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ গত কয়েক মাসে তালিবানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। তালিবান ভারতকে আশ্বাস দিয়েছে যে তাদের ভূমি থেকে কোনো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালিত হবে না। অন্যদিকে, খাইবার পাখতুনখোয়াতে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠী এবং ডুরান্ড লাইন নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবানের সম্পর্ক মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্ক জোরদার হওয়া দুই দেশের জন্যই নতুন অর্থ বহন করছে। আফগান নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা চালু করে ভারত সেই বার্তা দিয়েছে।
গত মাসেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে কথা বলেছেন। এর আগে, তালিবান প্রশাসন প্রথমগাম সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করেছিল এবং ভারতের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছিল। ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে চাবাহার বন্দর নিয়েও অংশীদারিত্ব রয়েছে। পাশাপাশি, ইন্টারন্যাশনাল নর্থ সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডোর নিয়েও দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করছে, যা ভারতকে ইরান ও রাশিয়ার মাধ্যমে ইউরোপের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এভাবেই দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করছে, যেখানে পাকিস্তানের সঙ্গে উভয় দেশের সম্পর্কই অস্বস্তিকর।