Dps Dwarka বিতর্কে উত্তাল দিল্লি, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন অভিভাবকরা

নয়াদিল্লি: দিল্লির দ্বারকা এলাকার দিল্লি পাবলিক স্কুল (DPS Dwarka) কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের মধ্যে বিবাদ বর্তমানে চরমে পৌঁছেছে। স্কুলের বিরুদ্ধে শিশুদের উপর ক্রমাগত মানসিক নির্যাতন, বিচার বিভাগীয় এবং প্রশাসনিক নির্দেশ উপেক্ষা করার গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকরা। শিশুদের মানসিক, আবেগিক এবং শিক্ষাগত সুরক্ষার দাবিতে অভিভাবকরা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাছে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। এই মর্মেই তাঁরা একটি চিঠিও লিখেছেন।
মূল বিবাদের কারণ ফি বৃদ্ধি: DPS Dwarka বিতর্কের প্রধান কারণ হলো ফি বৃদ্ধি। অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষা অধিদপ্তর (DoE), দিল্লি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও স্কুল কর্তৃপক্ষ বেআইনিভাবে ফি বাড়িয়েছে। অভিভাবকদের দাবি, গত কয়েক বছরে স্কুল কর্তৃপক্ষ ৫০ শতাংশেরও বেশি ফি বৃদ্ধি করেছে। এর প্রতিবাদ করলে অভিভাবকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়।
বাউন্সার দিয়ে শিশুদের প্রবেশে বাধা: অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় কিছু শিশুর নাম স্কুল থেকে কেটে দিয়েছে এবং জোরপূর্বক ফি আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। এমনকি শিশুদের স্কুলে প্রবেশে বাধা দিতে বাউন্সারদেরও ব্যবহার করা হচ্ছে।
১৩ মে-র বড় हंगामा: DPS Dwarka-তে ফি সংক্রান্ত বিবাদ দীর্ঘ দিন ধরে চললেও, গত ১৩ মে-র ঘটনার পর এটি সম্পূর্ণরূপে জনসমক্ষে আসে। অভিভাবকদের দাবি, ১৩ মে স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশ এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মীদের সহায়তায় শিশুদের জোর করে স্কুল থেকে বের করে দেয়। অভিভাবকদের অভিযোগ, শিশুদের বাবা-মাকে না জানিয়েই তাদের অজানা স্থানে ফেলে দেওয়া হয় এবং কিছু শিশু কয়েক ঘণ্টা পর বাড়িতে ফেরে, যা তাদের ওপর মানসিক আঘাত হানে। এর আগেও একাধিক শিশুকে সারাদিন লাইব্রেরিতে আটকে রাখা হয়েছে, তাদের খেলতে বা বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। অভিভাবকরা প্রশ্ন তুলেছেন, ছয় বছরের শিশুদের কিভাবে বোঝাবেন যে স্কুল তাদের কেন অপরাধীর মতো বের করে দিয়েছে?
হাইকোর্ট ও নির্দেশিকার অবজ্ঞা: অভিভাবকরা DPS স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্ট, শিক্ষা অধিদপ্তর এবং জেলা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ তুলেছেন। অভিভাবকদের মতে, গত ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে দিল্লি হাইকোর্ট একটি আদেশ জারি করে DPS দ্বারকা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিল যে তারা শিশুদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের জোর-জুলুম করতে পারবে না। এর আগে ৪ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে দক্ষিণ-পশ্চিম জেলার ম্যাজিস্ট্রেটের তদন্ত রিপোর্টে নিশ্চিত করা হয়েছিল যে স্কুল কর্তৃপক্ষ শিশুদের সাথে মানসিক ও আবেগিকভাবে দুর্ব্যবহার করেছে। ১৫ মে, ২০২৫ তারিখে শিক্ষা অধিদপ্তর প্রভাবিত শিশুদের অবিলম্বে স্কুলে ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুল এই সমস্ত নির্দেশ উপেক্ষা করে চলেছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তার কারণে শিশুরা এখনও দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তাঁরা চিঠিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটি অবিলম্বে স্থগিত করা এবং এই পুরো ঘটনার তদন্তের জন্য একটি বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।