‘ভারতীয়দের ইমেল স্প্যামের মতো’, ভারতবিদ্বেষী মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে নিউজিল্যান্ডের মন্ত্রী

“ভারতীয়দের ইমেল স্প্যামের মতো। তাই কোনো দিন ভারতীয়দের ইমেলের জবাব দিই না।” এমন মন্তব্য করে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন নিউজিল্যান্ডের অভিবাসন মন্ত্রী এরিকা স্ট্যানফোর্ড। দিল্লির সঙ্গে ওয়েলিংটনের সম্পর্ক এমনিতেই ভালো। শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য-সহ নানা ক্ষেত্রে দু’দেশের সহযোগিতা খুবই মজবুত। ফলে এরিকার এই বিদ্বেষমূলক মন্তব্যে আন্তর্জাতিক মহলে নানা আলোচনা চলছে।
জানা গেছে, গত ৬ মে সংসদীয় অধিবেশন হয়। সেখানেই ব্যক্তিগত ইমেল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এরিকা বলেন, “আমি অনেক অযাচিত ইমেল পাই। যেমন ভারতের লোকজন প্রায়শই অভিবাসন সংক্রান্ত পরামর্শ চাওয়ার মতো কিছু ইমেল পাঠান, যার আমি কখনও উত্তর দিই না। আমি এগুলোকে স্প্যামে ফেলে দেওয়ার মতোই মনে করি।” এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেবার পার্টির এমপি প্রিয়াঙ্কা রাধাকৃষ্ণণ। তিনি বলেন, “এই ধরনের মন্তব্য অসংবেদনশীল এবং বৈষম্যমূলক। এগুলো কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। ভারতের সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের যা সম্পর্ক, সেখানে ভারতীয়দের ইমেলকে অযাচিত বলে খুবই নেতিবাচক মানসিকতা।”
বিতর্ক বাড়তেই নিজের মন্তব্য নিয়ে মুখ খোলেন এরিকা। তিনি দাবি করেন, “আমি ওইভাবে বলিনি যে আমি ভারতীয়দের ইমেলকে স্প্যাম হিসেবে বিবেচনা করি। আমি কেবল বলেছি যে ওগুলোকে প্রায় স্প্যামের মতো মনে করি।” প্রসঙ্গত, এরিকা ২০২৩ সালের ২৭ নভেম্বর থেকে নিউজিল্যান্ডের অভিবাসন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সনের নেতৃত্বে জাতীয় নেতৃত্বাধীন জোট সরকার গঠনের পর তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ক্রিস্টোফার গত মার্চ মাসেই ভারত সফরে আসেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেন। বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা এবং শিক্ষার মতো একাধিক ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করা নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেন।
উল্লেখ্য, ভারত-নিউজিল্যান্ড একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাজ করছে, যা ২০২৫ সালের শেষে চূড়ান্ত হওয়ার আশা রয়েছে। এই চুক্তির লক্ষ্য কৃষি, খনিজ, ওষুধ এবং পর্যটনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে বাণিজ্য বৃদ্ধি করা। শিক্ষাক্ষেত্রেও দু’দেশের সহযোগিতা মজবুত। ১৫ হাজারেরও বেশি ভারতীয় শিক্ষার্থী নিউজিল্যান্ডে পড়াশোনা করেন। ফলে এরিকার এই মন্তব্য দু’দেশের সহযোগিতায় কোনো প্রভাব ফেলে কিনা, সেদিকেই এখন নজর।