বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক? ডিভোর্সের পর ১ টাকাও নয়, হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়!

বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক শুধু দাম্পত্য সম্পর্কই নষ্ট করে না, এবার তা আপনার পকেটেও টান দিতে পারে। সম্প্রতি ছত্তিশগড় হাইকোর্ট একটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছে, যেখানে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, যদি কোনো স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক প্রমাণিত হয়, তাহলে বিবাহবিচ্ছেদের পর তিনি কোনো রকম ভরণপোষণ (Alimony) পাবেন না। এই রায়টি আইনগতভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি ভবিষ্যতে বহু বিবাহবিচ্ছেদ মামলার ক্ষেত্রে একটি নজির স্থাপন করতে পারে। সাধারণত, বিবাহবিচ্ছেদের পর স্ত্রীরা ভরণপোষণ পেয়ে থাকেন, তবে এই রায়ের ফলে এখন স্ত্রীর চরিত্র এবং আচরণের বিষয়টি আদালত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে। এটি আর্থিক দিক থেকেও একটি বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে, কারণ এর আগে এমন পরিস্থিতিতেও স্ত্রীকে ভরণপোষণ দেওয়ার চল ছিল।
এই মামলাটি শুরু হয়েছিল একজন স্বামীর দায়ের করা বিবাহবিচ্ছেদ আবেদনের মাধ্যমে, যিনি তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ এনেছিলেন। স্বামী আদালতে এই বিষয়ে জোরালো প্রমাণ পেশ করেন। পারিবারিক আদালত প্রথমে বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করলেও স্ত্রীকে ভরণপোষণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। স্বামী এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ছত্তিশগড় হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানায় যে, যদি স্ত্রী বিবাহের সময় স্বামীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, তবে তা ‘নিষ্ঠুরতা (Cruelty)’ হিসেবে বিবেচিত হবে। এমন পরিস্থিতিতে স্ত্রী ভরণপোষণের অধিকারী নন। আদালত আরও জোর দিয়ে বলেছে যে, ভরণপোষণ শুধুমাত্র তাদেরই দেওয়া উচিত যারা নির্দোষ এবং যাদের সত্যিকারের আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন। এই সিদ্ধান্ত সমাজে একটি জোরালো বার্তা দিচ্ছে যে, বিবাহ কেবল একটি আবেগিক বন্ধন নয়, এটি একটি আইনি এবং নৈতিক দায়িত্বও বটে। এই রায়ের ফলে ভবিষ্যতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলাগুলোতে স্ত্রীদের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়টি কঠোরভাবে খতিয়ে দেখা হবে এবং এর আর্থিক প্রভাবও দেখা যাবে।