ইসলামের আগের কুরেশি জাতি: ধর্ম বদলের নেপথ্যে-ইতিহাস বলছে ভিন্ন কথা!

ইসলামের আগের কুরেশি জাতি: ধর্ম বদলের নেপথ্যে-ইতিহাস বলছে ভিন্ন কথা!

কুরেশি পদবী শুনলে সাধারণত আমাদের মনে আসে মুসলিম সম্প্রদায়ের কথা। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় এর এক ভিন্ন চিত্র লুকিয়ে আছে। জানা যায়, ইসলাম ধর্মের উৎপত্তিরও আগে কুরেশিরা মক্কার কাবা অঞ্চলের প্রাচীন বাসিন্দা ছিলেন। সে সময় মক্কা ছিল আরবের এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র, আর কুরেশিরা ছিলেন সেখানকার ক্ষমতাশালী বণিক সম্প্রদায়, যাদের হাতে ছিল মক্কার নিয়ন্ত্রণ। কাবার পবিত্র পৌত্তলিক উপাসনালয়ের রক্ষক হিসেবেও তাঁরা পরিচিত ছিলেন।

এই কুরেশরা কিন্তু একসময় একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী ছিলেন না, বরং একাধিক ঈশ্বরের পূজা করতেন এবং মূর্তি পূজারও অনুসারী ছিলেন। ইসলামের প্রবক্তা, নবী মুহাম্মদ, যিনি নিজেও কুরেশ জাতির বনু হাশিম বংশের সন্তান ছিলেন, যখন একেশ্বরবাদ ও নিরাকার আল্লাহর উপাসনার প্রচার শুরু করেন, তখন তা প্রাচীন কুরেশদের কাছে অগ্রহণযোগ্য ছিল। এই ধর্মীয় মতপার্থক্যের কারণে নবী মুহাম্মদকে তাঁর জন্মভূমি মক্কা থেকে বিতাড়িত করা হয়।

নবী মুহাম্মদ তাঁর অনুগামীদের নিয়ে মদিনায় চলে গেলেও সংঘাতের অবসান হয়নি। মক্কায় বসেও ইসলাম ধর্ম পালনের বিরোধিতা করতে থাকে বহুশ্বরবাদী কুরেশরা, যার ফলস্বরূপ বদর, উহুদ এবং খন্দক-এর মতো ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। অবশেষে মক্কা বিজয় অভিযানে নবী মুহাম্মদ সামরিক শক্তিতে কুরেশদের পরাজিত করেন। রাজনৈতিক পালাবদলের সাথে সাথে অধিকাংশ কুরেশই মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং সেই থেকে তাঁরাই কুরেশি নামে পরিচিত হন। আজও মক্কাতেই সবচেয়ে বেশি মুসলিম কুরেশি বসবাস করেন, তবে মক্কার ক্ষমতা কুরেশদের হাতেই রয়ে গেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *