অনলাইনে প্রেম এবং তারপর বিবাহ, আধুনিক সমাজে এর প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারেজ ফাউন্ডেশনের একটি সমীক্ষা এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে। এই সমীক্ষা অনুযায়ী, অনলাইনে পরিচিত হওয়া দম্পতিদের মধ্যে বিচ্ছেদের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে, বিয়ের প্রথম তিন বছরের মধ্যে এই ধরনের দম্পতিদের বিচ্ছেদের সম্ভাবনা প্রায় ১২ শতাংশ, যা ৭ বছর পর ১৭ শতাংশে উন্নীত হয়। এর বিপরীতে, ঐতিহ্যবাহী অ্যারেঞ্জড ম্যারেজের ক্ষেত্রে বিচ্ছেদের সম্ভাবনা প্রথম তিন বছরে মাত্র ২ শতাংশ এবং ৭ বছর পর তা ১০ শতাংশে পৌঁছায়। এই তথ্য সমাজের প্রচলিত ধারণাকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে এবং অনলাইন সম্পর্কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

এই সমীক্ষায় ২০০০ জনেরও বেশি দম্পতি অংশ নেন, যাদের সবার বয়স ছিল ৩০ বছরের বেশি। গবেষকরা তাদের সম্পর্কের সূত্রপাত সম্পর্কে বিশদ তথ্য সংগ্রহ করেন। শুধু অনলাইন সম্পর্কই নয়, কর্মক্ষেত্রে গড়ে ওঠা প্রেমের সম্পর্ক নিয়েও এই সমীক্ষায় চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। দেখা গেছে, কর্মক্ষেত্রে প্রেম করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া দম্পতিদের মধ্যে বিচ্ছেদের হার প্রায় ২৪ শতাংশ, যা অনলাইন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশের তুলনায় বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইন পরিচিতি থেকে সৃষ্ট সম্পর্কে বিচ্ছেদের প্রধান কারণ হলো দম্পতিদের মধ্যে ‘অপরিচিতি’। খুব অল্প সময়ে একে অপরের প্রেমে পড়া এবং ভিন্ন মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়াই বিচ্ছেদের মূল কারণ। বিয়ের পর যখন বাস্তবতার মুখোমুখি হন, তখন মতের অমিলগুলো প্রকট হয়ে ওঠে, যা দীর্ঘমেয়াদী অশান্তি এবং ultimately বিচ্ছেদের দিকে ঠেলে দেয়। বিশেষ করে, বিয়ের প্রথম তিন বছর এই দম্পতিদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এই গবেষণাটি প্রযুক্তির যুগে সম্পর্ক এবং বিবাহ নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যেখানে সময় এবং বোঝাপড়ার গুরুত্ব আবারও স্পষ্ট হয়েছে।