পাকিস্তানে বিচারহীনতা: প্রতিকার চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার নারীরা

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে নারী নির্যাতনের ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। তবে এর প্রতিকার চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগী নারীরা। প্রদেশটিতে নারীদের সুরক্ষায় তিনটি পৃথক সংস্থা কাজ করলেও তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে। ফলস্বরূপ, সুবিচার পেতে দীর্ঘ সময় লাগছে ভুক্তভোগীদের। সরকারি কর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার নারীরা কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
ভুক্তভোগী নারীদের অভিযোগ, প্রাতিষ্ঠানিক এই সমন্বয়হীনতা তাদের ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। একটি হেল্পলাইন থেকে আরেকটি দফতরে ঘুরতে ঘুরতে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। অনেক সময় এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে অভিযোগ স্থানান্তরিত হতে হতে বিচার পাওয়ার আশা ছেড়ে দেন অনেকেই। নারী অধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন, প্রতিটি সংস্থার কর্মপরিধি নির্দিষ্ট হলেও তাদের মধ্যে কোনো সুস্পষ্ট যোগসূত্র নেই। ফলে, একজন ভুক্তভোগী নারী জানেন না, তাকে ঠিক কোথায় অভিযোগ জানাতে হবে। অভিযোগ কেন্দ্রগুলো ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় যাতায়াতেও ভোগান্তির শিকার হতে হয় তাদের।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের তথ্য অনুযায়ী, গত চার বছরে পাঞ্জাবে নারী নির্যাতনের ৬,৬৫৪টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ২০২১ সালে ১,৩৫৮টি এবং ২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসেই ১,৯৫০টি অভিযোগ জমা পড়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৪৫ শতাংশ বেশি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পুলিশ, সমাজকল্যাণ এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক দফতরে কর্মরত নারীরাই সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে, ভুক্তভোগী নারীদের জন্য একটি সমন্বিত এবং সহজ বিচার ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা ক্রমশ প্রকট হচ্ছে।