ডাক্তার হনুমান! ভক্তদের অসাধ্য রোগ সারাচ্ছেন দেবতা নিজেই

ভারতের প্রতিটি মন্দিরই যেন এক একটি অলৌকিকতার সাক্ষী। এমনই এক ব্যতিক্রমী এবং আশ্চর্য মন্দির মধ্যপ্রদেশের ভিণ্ড জেলায় অবস্থিত, যা ‘ডাক্তার হনুমান মন্দির’ নামে পরিচিত। এই মন্দিরটি দন্দরৌয়া ধামে অবস্থিত এবং এখানে ভগবান হনুমানকে স্বয়ং ডাক্তার রূপে পূজা করা হয়। এই মন্দিরের সাথে জড়িত বিভিন্ন বিশ্বাস এবং রহস্য এটিকে আরও বিশেষ করে তুলেছে, যেখানে ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে স্বয়ং হনুমানজি তাঁদের দুরারোগ্য ব্যাধি নিরাময় করেন।
প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো এই মন্দিরের সঙ্গে এক অলৌকিক ঘটনা জড়িত। কথিত আছে, একসময় এই এলাকায় একটি নিম গাছ কাটা হচ্ছিল, তখন সেই গাছের নিচ থেকে ভগবান হনুমানের একটি প্রাচীন মূর্তি আবিষ্কৃত হয়। এই মূর্তিটি গোপী বা নারীবেশে নৃত্যরত অবস্থায় ছিল, যা ভারতে এই ধরনের একমাত্র মূর্তি। ভক্তদের বিশ্বাস, এই মূর্তি এতটাই জীবন্ত যে মনে হয় যেন এটি সত্যিই নৃত্য করছে। মন্দিরের পেছনে একটি আকর্ষণীয় গল্প প্রচলিত আছে; শিবকুমার দাস নামে এক সাধু যিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন, হনুমানজির ভক্ত হওয়ায় নিয়মিত মন্দিরে পূজা করতেন। একদিন রাতে হনুমানজি তাঁকে ডাক্তারের বেশে দর্শন দেন এবং এরপরই সাধু সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। সেই দিন থেকেই এই মন্দির ‘ডাক্তার হনুমান মন্দির’ নামে পরিচিতি লাভ করে।
এই মন্দিরে আগত ভক্তদের দৃঢ় বিশ্বাস, হনুমানজি এখানে সকল প্রকার রোগের নিরাময় করেন। বিশেষ করে ক্যান্সার, ফোড়া, আলসার এবং অন্যান্য গুরুতর রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা এখানে আসেন। বিশ্বাস করা হয় যে, মন্দিরের পাঁচবার পরিক্রমা করলে এবং হনুমানজির বিভূতি ধারণ করলে রোগমুক্তি ঘটে। কিছু ভক্তের দাবি, মন্দিরের চরণামৃত পান করলেও নাকি গুরুতর রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। প্রতি মঙ্গলবার এবং শনিবার এখানে ভক্তদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার ‘বুঢ়ওয়া মঙ্গল’ হিসেবে এক বিশেষ উৎসব পালিত হয়, যেখানে লক্ষাধিক ভক্ত সমবেত হন। এই দিনে হনুমানজি সখী রূপে অশোক বাটিকায় প্রবেশ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়, যা এই দিনের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তোলে।