কে চালাবে পাকিস্তান? সেনা নাকি এয়ারফোর্স—নতুন দ্বন্দ্বে দেশ!

প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক অঙ্গনে গত ৭৮ বছর ধরে দেশটির সেনাবাহিনী একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখেছে। স্বাধীনতার পর থেকে ৩৩ বছর সরাসরি ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করেছে সেনাবাহিনী, এবং বাকি ৪৫ বছর ধরে পরোক্ষভাবে দেশের শাসনভার তাদের হাতেই রয়েছে। চারজন সেনাপ্রধান আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, জিয়াউল হক এবং পারভেজ মোশাররফ দেশটির রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাকিস্তানের বৈদেশিক নীতি, বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক, সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন বলেই মনে করা হয়।
সেনাবাহিনী তাদের এই দাপট তৈরি করেছে আইএসআই এবং পারমাণবিক অস্ত্রের কমান্ড নিয়ন্ত্রণকারী স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানস ডিভিশন (SPD) এর ওপর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। এছাড়াও, সেনাবাহিনী দেশের বৃহত্তম ভূমি মালিক এবং ব্যবসায়িক গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। ডিএইচএ (DHA), ফৌজি ফাউন্ডেশন এবং আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের মতো সংস্থাগুলির মাধ্যমে সেনাবাহিনী রিয়েল এস্টেট, খনিজ, নির্মাণ এবং খুচরা ব্যবসায় একটি বড় অংশীদারিত্ব রাখে। ২০০৭ সালে প্রকাশিত আয়েশা সিদ্দিকার ‘মিলিটারি ইনকর্পোরেটেড’ বই অনুসারে, সে সময় সেনাবাহিনীর সম্পদ ছিল ২০ বিলিয়ন ডলার, যা বর্তমানে ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয়। অর্থাৎ, পাকিস্তানের ৪০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির একটি বিশাল অংশ সেনাবাহিনীর দখলে।
তবে, সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান বিমানবাহিনী (PAF) সেনাবাহিনীর এই দীর্ঘদিনের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। বিশেষ করে একটি সাম্প্রতিক ভারত-পাক সংঘাতের সময় বিমানবাহিনীর ভূমিকার কারণে সেনাবাহিনীর ‘ভাবমূর্তি’ কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। তা সত্ত্বেও, পাকিস্তানের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ এখনও অটুট রয়েছে। তবে, জনগণের মধ্যে বিমানবাহিনীর জনপ্রিয়তা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আনতে পারে।