২২৬ বছর পর নবাবি শাসনের অবসান, ১ জুনে সত্যিকারের মুক্তি পায় ভোপাল

মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের ইতিহাসে ১লা জুন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনটি ২২৬ বছরের নবাবী শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভোপালকে সম্পূর্ণরূপে ভারতের অংশ করে তোলে। ভারতের স্বাধীনতার প্রায় দুই বছর পর এই ঐতিহাসিক ঘটনাটি ঘটেছিল। এই বিশেষ দিনটিকে ভোপাল গৌরব দিবস হিসেবে পালন করা হয়, যা এই শহরের দীর্ঘ সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
ভোপালের শেষ নবাব হামিদুল্লাহ খান ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট ভারতের সঙ্গে সংযুক্তির নথিতে স্বাক্ষর করলেও, ‘স্ট্যান্ডস্টিল অ্যাগ্রিমেন্ট’-এর অধীনে তিনি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে রয়ে যান। ভারত সরকার নবাবকে একটি প্রতিনিধি সরকার গঠনের নির্দেশ দেয়, যেখানে চতুর নারায়ণ মালবীয়কে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু দেশের অন্যান্য অংশে যখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হচ্ছিল, তখন ভোপালে নবাবী শাসন কেন বজায় থাকবে, এই প্রশ্ন জনগণের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করে।
এই অসন্তোষ থেকেই ১৯৪৯ সালের ৬ই জানুয়ারি বিলিওনিকরণ আন্দোলন শুরু হয়, যা ৩০শে জানুয়ারি পর্যন্ত চলে। রতন কুমার গুপ্তার নেতৃত্বে এই আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল এবং এটি দ্রুত ভোপালের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, ১৯৪৯ সালের ৩০শে এপ্রিল ভারত সরকার ও নবাবের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী, ১৯৪৯ সালের ১লা জুন থেকে ভোপালের প্রশাসন ভারত সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়, যার মাধ্যমে নবাবী শাসনের অবসান ঘটে এবং ভোপাল স্বাধীন ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে।