উত্তর কোরিয়ার মোবাইলে প্রতি ৫ মিনিটে স্ক্রিনশট, ‘ওপ্পা’ বললেই সতর্কতা

উত্তর কোরিয়া থেকে পাচার হওয়া একটি মোবাইল ফোনের তথ্য উঠে এসেছে এক শ্বাসরুদ্ধকর বাস্তবতা—কীভাবে দেশটির নেতা কিম জং উনের সরকার নাগরিকদের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে এবং বাইরের বিশ্বের প্রভাব কঠোরভাবে দমন করছে। ২০২৪ সালে পাচার হওয়া এই ফোনটি সম্প্রতি বিবিসি বিশ্লেষণ করে জানতে পারে, ফোনটি প্রতি পাঁচ মিনিটে একটি স্ক্রিনশট নিচ্ছে—ব্যবহারকারীর অজান্তেই। এই স্ক্রিনশটগুলো ব্যবহারকারীর দৃষ্টির আড়ালে থাকলেও সরকার তা সহজেই পর্যবেক্ষণ করতে পারে, যা একটি শক্তিশালী নজরদারি ব্যবস্থার ইঙ্গিত দেয়।
এতটাই কড়াকড়ি যে, ফোনে কেউ ‘ওপ্পা’ টাইপ করলেই তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বদলে যাচ্ছে ‘কমরেড’-এ, এবং একটি সতর্কবার্তা দেখাচ্ছে: “এই শব্দ কেবলমাত্র আপনার ভাই বা বোনকে বোঝাতে ব্যবহার করতে পারবেন।” এমনকি ‘দক্ষিণ কোরিয়া’ শব্দটি টাইপ করলেও সেটি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে ‘পুতুল রাষ্ট্র’তে—উত্তর কোরিয়ার সরকারিভাষায় দক্ষিণ কোরিয়ার বর্ণনা। এসব দেখায়, শুধুমাত্র বিনোদন নয়, ভাষাও সেন্সর করছে কিম জং উনের শাসনব্যবস্থা।
উত্তর কোরিয়ার মোবাইল ফোনগুলোর ইন্টারনেট অ্যাক্সেস নেই, কিন্তু তবুও দক্ষিণ কোরিয়ার নাটক ও সংস্কৃতি গোপনে সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের হাতে। এই প্রবাহ ঠেকাতে সরকার আরও কঠোর নজরদারি ও দমনমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। পুরো পরিস্থিতি আরও একবার মনে করিয়ে দেয়, কিভাবে একটি প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি ব্যবস্থা ব্যবহার করে উত্তর কোরিয়া তার নাগরিকদের বাইরের বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন এবং আদর্শিকভাবে নিয়ন্ত্রিত রাখছে।