২০০০ বছরের পুরনো কফিন উদ্ধার, আতঙ্কিত এলাকাবাসী

কয়েক সপ্তাহ আগে মিশরের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ আলেকজান্দ্রিয়া শহরে খননকার্য চালাচ্ছিল। সে সময় তারা একটি প্রাচীন পাথরের কফিন খুঁজে পায়। কফিনটি এতটাই ভারী ছিল যে এটিকে তুলতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।
এটি কোনো সাধারণ কফিন ছিল না। ২০০০ বছরের পুরনো এই কফিনটি মাটি থেকে ১৫ ফুট নিচ থেকে খনন করে বের করা হয়। এর আকার এবং ওজন ছিল অস্বাভাবিক। কফিনটির ওজন ছিল ২৭ হাজার কিলোগ্রাম এবং এটি কালো গ্রানাইট দিয়ে তৈরি।
২০০০ বছরের পুরনো কফিন আবিষ্কারের পর স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শহরে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিছু লোক দাবি করে, এই কফিনটি অভিশপ্ত। এটি খুললেই কেয়ামত নেমে আসবে। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কর্মকর্তারা যখন এই প্রাচীন কফিনটি খোলার ঘোষণা করেন, তখন স্থানীয়রা তীব্র বিরোধিতা করে। তারা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের হুমকি দেয় যে এমনটি করলে নিশ্চিত ধ্বংস অনিবার্য।
কফিন খোলা হলো, লোকজনের ভয় বাড়ল
অনেক হুমকি এবং আতঙ্কের পরেও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ শেষ পর্যন্ত কফিনটি খোলে। কিন্তু কোনো কেয়ামত ঘটেনি। তবে কফিনের ঢাকনা খোলার সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার লোকজনের ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। এই কফিনের ভেতরে তিনটি মানুষের কঙ্কাল পাওয়া যায়। অসহ্য দুর্গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, যার কারণে সবাই নাক ঢেকে ফেলে। গন্ধ এত তীব্র ছিল যে সবাই সেখান থেকে সরে পড়ে।
কফিনের ভেতরে পাওয়া কঙ্কালগুলোর কাছে কোনো মূল্যবান জিনিস পাওয়া যায়নি। কোনো সোনা বা রুপার গহনাও মেলেনি। কারণ মিশরের মমিগুলোর কাছে সাধারণত দামি হীরা, সোনা-রুপার গহনা এবং অমূল্য জিনিস রাখা হয়, কিন্তু এখানে এমন কিছু ছিল না। মিশরের বিখ্যাত ‘ডেথ মাস্ক’ও ছিল না। এর থেকে অনুমান করা হয় যে এই ‘মমি’গুলো সম্ভবত কোনো সাধারণ গরিব পরিবারের হতে পারে। কঙ্কালগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আলেকজান্দ্রিয়া ন্যাশনাল মিউজিয়ামে পাঠানো হয় এবং কফিনটি সেনাবাহিনীর জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
তবে রহস্যের বিষয়ে একটি অদ্ভুত এবং আশ্চর্যজনক তথ্য সামনে এসেছে। একজন ব্যক্তি এই কফিনের ভেতর থেকে রক্ত পানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এর জন্য তিনি একটি অনলাইন পিটিশন শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত ৩১,০০০-এরও বেশি লোক এটি সমর্থন করেছে। এই ব্যক্তি দাবি করেছেন, এটি প্রাচীন মিশরীয়দের রক্ত, যা পান করলে অলৌকিক শক্তি পাওয়া যাবে। এই রক্ত কোনো এনার্জি ড্রিংকের মতো শক্তিশালী এবং এটি বিশেষ শক্তি দেবে বলেও দাবি করেন তিনি।
ঘটনা নিয়ে মজার মিম ভাইরাল
তবে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এবং গবেষকরা জানিয়েছেন, এটি কোনো রক্ত নয়, বরং শত শত বছর ধরে কঙ্কালগুলোর চারপাশে জমে থাকা নোংরা জল হতে পারে। এটি পান করলে প্রাণহানিও হতে পারে। এতে সংক্রামক ব্যাকটেরিয়াও থাকতে পারে। ইন্টারনেটে এই ঘটনা নিয়ে মজার মিমও তৈরি হয়েছে। কুসংস্কার এবং মিশরীয় সংস্কৃতি উভয় দিক থেকেই এই বিষয়ে বিভিন্ন দাবি করা হয়েছে।