মেয়ের ঠান্ডার জন্য ১৪ কোটি পোড়ালেন বাবা, কে ছিলেন সেই কোটিপতি?

বলা হয়, বাবা-মায়ের কাছে মেয়েরা খুবই আদরের হয়। একজন বাবা তার মেয়ের খুশির জন্য যেকোনো সীমা অতিক্রম করতে পারেন। কিন্তু আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন যে একজন বাবা তার মেয়ের ঠান্ডার জন্য ১৪ কোটি টাকা পুড়িয়ে দেবেন?
হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন। এটি কোনো কাল্পনিক গল্প নয়, একটি বাস্তব ঘটনা। একজন বাবা ১৪ কোটি টাকা পুড়িয়ে দিয়েছিলেন শুধু তার মেয়ের ঠান্ডা লাগছিল বলে। এই মহান ব্যক্তির নাম ছিল পাবলো এসকোবার। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই খামখেয়ালী ব্যক্তি সম্পর্কে।
পাবলো এসকোবার কে ছিলেন?
বিশ্বের অপরাধ জগতে এমন অনেক নাম আছে যা তাদের কালো কীর্তির জন্য ইতিহাসের পাতায় লেখা আছে। তবে যদি কারও নাম সবার উপরে নেওয়া হয়, তবে তা হলো পাবলো এসকোবার। কলম্বিয়ার এই ব্যক্তি শুধু একজন মাদক সম্রাট ছিলেন না, তাকে অপরাধ জগতের ‘কিং’ হিসেবেও ধরা হতো। তার সম্পত্তি, প্রতিপত্তি এবং ত্রাসের গল্প বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত ছিল।
মেয়ের ঠান্ডা লেগেছিল, তারপর…
পাবলো শুধু অপরাধের জন্যই নয়, টাকা উড়ানোর জন্যও পরিচিত ছিলেন। একবার তার মেয়ের ভীষণ ঠান্ডা লেগেছিল। চারপাশে বরফঠান্ডা বাতাস বইছিল এবং পাবলো তার মেয়ের কাঁপুনির অবস্থা সহ্য করতে পারছিলেন না। তার কাছে দুই মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৪ কোটি টাকা) নগদ ছিল। তিনি এক মুহূর্ত দেরি না করে সেই নোটগুলোতে আগুন ধরিয়ে দিলেন, যাতে তার মেয়ের ঠান্ডা না লাগে।
ইঁদুরে খেলো কোটি কোটি টাকা
পাবলোর উপার্জনের অনুমান করা যায় এই ঘটনা থেকে যে তার দৈনিক আয় ছিল প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বেশি। এত টাকা ছিল যে তা সুরক্ষিত রাখার জন্য জায়গা কম পড়ছিল। তিনি অনেক গুদাম তৈরি করেছিলেন, যেখানে নোটের বান্ডিল বস্তাভর্তি করে রাখা হতো। কিন্তু সেখানেও নিরাপত্তা ছিল না। প্রতি বছর প্রায় ১ বিলিয়ন টাকার নোট ইঁদুর কেটে দিত। এমনও বলা হয় যে, পাবলো তার টাকা রাবার ব্যান্ড দিয়ে বাঁধার জন্য প্রতি সপ্তাহে ১০০০ ডলার খরচ করতেন।
ফোর্বসের তালিকায় অপরাধী
১৯৮৯ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন পাবলো এসকোবারকে বিশ্বের সপ্তম ধনী ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করেছিল। সেই সময় তার মোট সম্পত্তি ২৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি ছিল। তার মাদক ব্যবসা বিশ্বের ৮০% কোকেন বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করত। শুধু তাই নয়, তিনি তার ব্যবসা বাড়াতে এবং শত্রুদের ধ্বংস করতে কেবল পুলিশকেই নয়, বিচারক, নেতা এবং সাংবাদিকদেরও কিনেছিলেন। তার কারণে প্রায় ১৫,০০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল।
কীভাবে মৃত্যু হলো?
২ ডিসেম্বর ১৯৯৩ সালে এসকোবারের শেষ হয়। কলম্বিয়ান পুলিশের কাছ থেকে পালাতে গিয়ে ছাদে গোলাগুলির বর্ষণ হয় এবং তার মৃত্যু হয়। কিছু লোকের মতে, তিনি নিজেকে গুলি করে নিয়েছিলেন। তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কখনো সফল হয়নি।