বর্ধমানে ৬২ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল পেয়ে বৃদ্ধারবৃদ্ধার চক্ষু চড়কগাছ, হাইকোর্টে মামলা

বর্ধমানে ৬২ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল পেয়ে বৃদ্ধারবৃদ্ধার চক্ষু চড়কগাছ, হাইকোর্টে মামলা

বর্ধমানের বড়নীলপুরের শান্তি পাড়ার বাসিন্দা গীতা আদকের তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৬২,২৯১ টাকা আসায় তিনি হতবাক। একটি অ্যাসবেসটসের ঘরে স্বামী, পুত্র, পুত্রবধূ এবং দেড় বছরের নাতিকে নিয়ে বসবাসকারী এই বৃদ্ধা প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে এত বিপুল অঙ্কের বিল আসতে পারে।

তিনি অভিযোগ করেছেন যে বিদ্যুৎ দফতর ২ জুনের মধ্যে অর্ধেক টাকা পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নোটিশ দিয়েছে।

আকাশছোঁয়া বিলের কারণ নিয়ে প্রশ্ন

গীতা আদকের অভিযোগ, তিনি এত ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেননি। একটি অ্যাসবেসটসের চালের ঘরে বসবাস করে এত টাকার বিল আসা আসাম্ভব বলে মনে করছেন তিনি। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে গরমের মধ্যে দেড় বছরের নাতিকে নিয়ে কীভাবে থাকবেন, সেই চিন্তায় তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।

গীতাদেবী জানিয়েছেন, এতদিন বিদ্যুৎ দফতর থেকে যে বিল পাঠানো হয়েছে, তা তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পরিশোধ করেছেন। এমনকি গত জানুয়ারি মাসেও বিল অনুযায়ী টাকা জমা দিয়েছেন। তাহলে নতুন করে এত বকেয়া কোথা থেকে এলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

বিদ্যুৎ দফতর ১৩ মে, ২০২৫ তারিখে গীতা আদকের নামে তিন মাসের জন্য ৬৪৫৬ ইউনিটের বিল বাবদ ৬২,২৯১ টাকার একটি বিল পাঠিয়েছে। এই বিল অনুযায়ী, ১৬ মের মধ্যে ২১,১৭৩ টাকা, ১৬ জুনের মধ্যে ২১,১৭১ টাকা এবং ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ২১,১৭১ টাকা পরিশোধ করতে হবে।

বিদ্যুৎ দফতরের ব্যাখ্যা

এই বিষয়ে বিদ্যুৎ দফতরের পূর্ব বর্ধমান রিজিওনাল ম্যানেজার গৌতম দত্ত জানিয়েছেন, নিয়ম মেনেই গীতা আদকের বিদ্যুতের বিল পাঠানো হয়েছে। তাঁর দাবি, মিটার অ্যাকুমোলেশন থাকার কারণে বিল বেশি হয়েছে। গৌতম দত্ত আরও জানান, বিগত এক বছর আগে যেখানে গীতা আদকের তিনটি কোয়ার্টারে গড়ে ১১০০-১১৫০ ইউনিটের বেশি বিল আসত, তা শেষ তিনটে কোয়ার্টারে ২০০-২১০ ইউনিটের মধ্যে নেমে আসে। এরপর বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা সরেজমিনে গিয়ে মিটার পরীক্ষা করে দেখেন যে, মিটারে অ্যাকুমোলেশন ইউনিট জমে আছে। অর্থাৎ, পূর্বে বিলিংয়ে কিছু ত্রুটি ছিল যার কারণে প্রকৃত ব্যবহার হওয়া ইউনিটের বিল করা হয়নি, এবং এখন সেই বকেয়া ইউনিটগুলো একসঙ্গে বিল করা হয়েছে।

তবে, এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ গীতা আদক। তাঁর প্রশ্ন, বিদ্যুৎ দফতর যখন নির্দিষ্ট সময়ে বিল পাঠিয়েছে এবং তিনি তা পরিশোধ করেছেন, তখন মিটারে ইউনিট জমলো কীভাবে? এই ঘটনার জেরে বর্ধমান শহরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *