আরএসভি মোকাবিলায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার, শিশুদের জন্য আসছে নতুন টিকা!

প্রতি বছর লাখ লাখ শিশু রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস (RSV) দ্বারা আক্রান্ত হয়, বিশেষ করে ৬ মাসের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এটি গুরুতর আকার ধারণ করে। বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসের কারণে অনেক শিশুর মৃত্যু হয়। এটি বাবা-মা এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ ছিল। তবে আশার কথা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য প্রথমবারের মতো দুটি কার্যকর পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।
আরএসভি ভাইরাস কী
আরএসভি বা রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়া একটি ভাইরাস যা শ্বাসযন্ত্র এবং ফুসফুসকে সংক্রমিত করে। এটি সাধারণত হাঁচি, কাশি এবং ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এটি সাধারণ সর্দি-কাশির মতো হলেও নবজাতক এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।
শিশুদের মধ্যে আরএসভির লক্ষণ চিনুন
শুরুতে আরএসভির লক্ষণগুলো সাধারণ সর্দির মতো মনে হতে পারে, যেমন নাক দিয়ে জল পড়া, হালকা জ্বর, হাঁচি, কাশি এবং শিশুর খিটখিটে মেজাজ বা দুধ পান করতে সমস্যা। তবে শিশু যদি খুব দ্রুত বা কষ্ট করে শ্বাস নেয়, বুক থেকে আওয়াজ আসে, ঠোঁট বা আঙুল নীল হয়ে যায়, অথবা শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়, তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
ম্যাটারনাল ভ্যাকসিন (RSVpreF)
ডব্লিউএইচও-এর সুপারিশ অনুযায়ী, গর্ভবতী মহিলাদের ২৮ সপ্তাহ পর আরএসভি ভ্যাকসিন দেওয়া যেতে পারে। এটি ম্যাটারনাল ভ্যাকসিন নামে পরিচিত। এই ভ্যাকসিন মায়ের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা গর্ভে থাকা শিশুর কাছে পৌঁছে যায়। এর ফলে শিশু জন্মের পর কয়েক মাস আরএসভি থেকে সুরক্ষিত থাকে। এটি সাধারণ গর্ভাবস্থা পরীক্ষার সময় দেওয়া যেতে পারে।
মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ইনজেকশন (Nirsevimab)
এই ইনজেকশন সরাসরি নবজাতককে দেওয়া হয়। এতে আগে থেকে তৈরি অ্যান্টিবডি থাকে যা ভাইরাসের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে লড়াই করতে সাহায্য করে। একবার ইনজেকশন দিলে শিশু প্রায় ৫ মাস পর্যন্ত সুরক্ষিত থাকে। এটি বিশেষত সেইসব দেশ বা অঞ্চলের জন্য উপযোগী যেখানে আরএসভি নির্দিষ্ট ঋতুতে দ্রুত ছড়ায়।
বাবা-মায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
আপনি যদি গর্ভবতী হন, তাহলে ম্যাটারনাল ভ্যাকসিন নিতে পারবেন কিনা তা ডাক্তারের কাছে জেনে নিন। নবজাতকের যত্ন নেওয়ার সময় আরএসভির লক্ষণগুলোর দিকে খেয়াল রাখুন। আপনার শিশুকে সময়মতো ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে ইনজেকশন (Nirsevimab) নেওয়ার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করুন। আরএসভি থেকে বাঁচতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের থেকে নবজাতককে দূরে রাখুন।