ম্যাক্রোঁর কড়া হুঁশিয়ারি আমেরিকাকে: ‘তাইওয়ানে যুদ্ধ হলে একা হয়ে যাবে’; ট্রাম্পের ওপর ক্ষুব্ধ ম্যাক্রোঁ!

প্যারিস, এপি। ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য প্রদানে আমেরিকার উদাসীন মনোভাব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি সতর্ক করে বলেছেন যে, ইউক্রেনকে পরিত্যাগ করলে আমেরিকার বিশ্বাসযোগ্যতার মারাত্মক ক্ষতি হবে এবং ভবিষ্যতে যদি তাইওয়ানকে নিয়ে চীনের সঙ্গে কোনো সংঘাত হয়, তবে এর প্রভাব জোটের ওপর স্পষ্ট দেখা যাবে। এমন পরিস্থিতিতে মিত্র দেশগুলো আমেরিকার পাশে দাঁড়াতে দ্বিধা বোধ করবে।
ম্যাক্রোঁর এই মন্তব্যটি এসেছে গত বুধবার (জুনের প্রথম দিকে, ২০২৫) ব্রাসেলসে ইউক্রেন-সমর্থক প্রায় ৫০টি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠক থেকে আমেরিকার অনুপস্থিতির পর। এই বৈঠকটি ইউক্রেনকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের বিষয়ে আলোচনার জন্য অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ৪০ মাস ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধের সময় এই প্রথমবার আমেরিকা এই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিল। ন্যাটো সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে তৎকালীন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ উপস্থিত ছিলেন না। তার অনুপস্থিতিতে বৈঠকটির সভাপতিত্ব করেন ব্রিটেন ও জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা। হেগসেথ বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে আসবেন এবং সেখানে অনুষ্ঠিত হতে চলা ন্যাটো দেশগুলোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকে অংশ নেবেন। বুধবারের বৈঠকে আমেরিকার অনুপস্থিতিকে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতি তাদের শীতল মনোভাবের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়েও আমেরিকা খুব বেশি আগ্রহী নয়।
এই বৈঠকের পরই ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হেলি ২০২৬ সালের এপ্রিলের মধ্যে ইউক্রেনকে এক লাখ ড্রোন সরবরাহের ঘোষণা করেন। এদিকে, এই মাসেই হেগে অনুষ্ঠিতব্য ন্যাটো (উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা) সম্মেলনে ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভোলোদিমির জেলেনস্কিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। রাশিয়া জানিয়েছে, তাদের বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে সন্ত্রাসী হামলায় ইউক্রেনের পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলোও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। এই হামলাগুলো ডোনেৎস্ক এবং লুহানস্কের সেইসব এলাকায় হয়েছে, যা ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার দখলে রয়েছে। এছাড়াও, ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সাথে সংযুক্তকারী সমুদ্রের উপর নির্মিত সেতুতেও হামলা হয়েছে, তবে তাতে বিশেষ কোনো ক্ষতির খবর নেই। রাশিয়া রবিবার দুটি রেল ব্রিজে বিস্ফোরণের তদন্তের পর সেগুলোকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতির কার্যালয় হোয়াইট হাউস স্পষ্ট করেছে যে, রাশিয়ার বিমান ঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা সম্পর্কে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প অবগত ছিলেন না।