৫০টি হাতি মারার নির্দেশ এই দেশে, বাড়ি বাড়ি বিলি হবে মাংস; এর পিছনে চমকপ্রদ কারণ কী?

যেখানে অনেক দেশ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য প্রচারাভিযান চালাচ্ছে, সেখানে একটি দেশ এমনও আছে যেখানে একসঙ্গে ৫০টি হাতি মারার নির্দেশ জারি হয়েছে। শুধু এই হাতিগুলোকে মারা হবে তাই নয়, এর মাংস বাড়ি বাড়ি বিতরণ করা হবে। এর পেছনের কারণ কী? আসুন, আপনাকে বলি…
জিম্বাবুয়ের হাতির হত্যাযজ্ঞের পেছনে অবাক করা কারণ এবং বিতর্ক
আফ্রিকান দেশ জিম্বাবুয়েতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেখানে হাতিদের হত্যা করে তাদের মাংস স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এছাড়া, হাতিদের দাঁত সরকারকে জমা দেওয়া হবে।
কেন জিম্বাবুয়ে হাতিদের হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিল?
জিম্বাবুয়ে দ্রুত বর্ধনশীল হাতির সংখ্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন। বতসোয়ানার পর এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাতির জনসংখ্যার দেশ। পরিস্থিতি এমন যে, একটি জঙ্গলে মাত্র ৮০০ হাতির থাকার জায়গা রয়েছে, কিন্তু সেখানে ২,৫৫০টি হাতি বাস করছে, অর্থাৎ জঙ্গল সম্পূর্ণরূপে ওভারলোডেড হয়ে গেছে। এই ভারসাম্যহীনতা দেখে জিম্বাবুয়ের ওয়াইল্ডলাইফ অথরিটি (ZimParks) একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কর্মকর্তারা গত পাঁচ বছরে ২০০টি হাতিকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করেছেন, কিন্তু চাপ কমানোর এই প্রচেষ্টা যথেষ্ট ছিল না।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি ব্যক্তিগত রিজার্ভে ৫০টি হাতিকে মারা হবে। শুধু তাই নয়, তাদের মাংস স্থানীয় মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হবে, যাতে শুধু জনসংখ্যার নিয়ন্ত্রণ না হয়, বরং ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে খাবারও পৌঁছানো যায়।
গত বছরও ২০০টি হাতি মারা হয়েছিল। এর আগেও জিম্বাবুয়েতে হাতিদের হত্যা করার নির্দেশ জারি হয়েছিল। গত বছর যখন জিম্বাবুয়ে কয়েক দশক ধরে তীব্র খরার সম্মুখীন হচ্ছিল, তখন মানুষের ক্ষুধা মেটাতে এখানে ২০০টি হাতিকে মারা হয়েছিল। ১৯৮৮ সালের পর এই প্রথম এত বিপুল সংখ্যক হাতিকে শিকার করা হয়েছিল।
জিম্বাবুয়েতে ৫০টি হাতির হত্যাযজ্ঞের পাশাপাশি তাদের দাঁত সরকারকে জমা দেওয়া হবে। আসলে, বিশ্বজুড়ে হাতির দাঁতের ব্যবসা নিষিদ্ধ, যার কারণে জিম্বাবুয়ে এটিকে বিক্রি করার অনুমতি পায় না।
PETA-এর নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে:
জিম্বাবুয়ের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিপুল সংখ্যক মানুষ এর সমালোচনা করছেন। ওয়াইল্ডলাইফ অ্যাক্টিভিস্টদের মতে, হাতি কেবল একটি বন্যপ্রাণী নয়, পর্যটনেরও একটি প্রতীক। পর্যটন-নির্ভর অর্থনীতির একটি বড় অংশ তাদের উপর নির্ভর করে। যদি এভাবে হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকে, তাহলে জঙ্গল জনশূন্য হয়ে পড়বে। একই সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে পিপল ফর দ্য এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অফ অ্যানিম্যালস (PETA)-এর নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।