কেন কানাডা G7 শীর্ষ সম্মেলনের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আমন্ত্রণ জানাল? ৫টি কারণ জেনে নিন!

কানাডা এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্ক যখন চরম উত্তেজনার মধ্যে ছিল, তখনই কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি আসন্ন G7 শীর্ষ সম্মেলনে (১৫-১৭ জুন, কানানাস্কিস, আলবার্টা) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির মধ্যে ফোনে কথাও হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কানাডার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ (পূর্বতন টুইটার) পোস্ট করে এই তথ্য জানিয়েছেন।
জি৭ সম্মেলনে ভারতের আমন্ত্রণ: ৫টি মূল কারণ
তবে কানাডার এই উদ্যোগের পর সবার মনেই প্রশ্ন উঠেছে যে, কেন কানাডা এই সম্মেলনে ভারতকে আমন্ত্রণ জানাল। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য কানাডার এই অনুরোধের পেছনে পাঁচটি কারণ রয়েছে। আসুন, পয়েন্ট আকারে সেই কারণগুলো জেনে নিই:
১. বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত: ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং সম্প্রতি জাপানকে পিছনে ফেলে চতুর্থ অবস্থানে আসার দাবি করেছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী নিজেই একজন অর্থনীতিবিদ এবং তিনি ভারতের অর্থনৈতিক শক্তি সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত। ২০২৩ সালে G20 সভাপতিত্বের সময় ভারত উন্নয়নশীল দেশগুলির কণ্ঠস্বরকে বিশ্ব মঞ্চে জোরালোভাবে তুলে ধরেছিল। কানাডার মতো দেশগুলো G7-এ ভারতকে গ্লোবাল সাউথের প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি বলে মনে করে।
২. চীনের বিরুদ্ধে পাল্টা ভারসাম্য তৈরির কৌশল: G7 দেশগুলোর সাধারণ উদ্দেশ্য হলো চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও কৌশলগত শক্তি মোকাবিলা করা। ভারতকে অন্তর্ভুক্ত করা এই কৌশলেরই অংশ, যাতে এশিয়ায় একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ভারসাম্য তৈরি করা যায়।
৩. শক্তি, খনিজ, এআই এবং সাপ্লাই চেইনে ভারতের গুরুত্ব: ভারত আজ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, সবুজ শক্তির পরিবর্তন এবং এআই নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠেছে। কানাডার মতো সম্পদশালী দেশগুলোর এমন শক্তিশালী অংশীদারের প্রয়োজন, যার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়ানো যায়।
৪. ভারত-কানাডা সম্পর্ককে স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা: কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর শাসনামলে উভয় দেশের সম্পর্ক দ্রুত খারাপ হয়েছিল। কানাডার নতুন সরকার আবার নতুন করে শুরু করতে চাইছে। কানাডায় খালিস্থানি আন্দোলনকে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া নিয়ে ভারতের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ রয়েছে। যদি কানাডার সরকার এই দিকে সুনির্দিষ্ট প্রচেষ্টা করে, তাহলে উভয় দেশের সম্পর্ক পুনরুদ্ধার হতে পারে। কানাডা চায় ভারতের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা আবার শুরু হোক। G7-এ আমন্ত্রণ জানানো একটি ইঙ্গিত যে কানাডা এখন এই সম্পর্কগুলোকে রিসেট করতে চায়।
৫. মোদীর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা এবং ভারতের কৌশলগত অবস্থান: ট্রাম্প হোক বা পুতিন অথবা ম্যাক্রোঁ – বিশ্ব মঞ্চে নরেন্দ্র মোদীর খ্যাতি ও প্রভাব সবাই স্বীকার করে। কানাডা জানে যে ভারতকে এখন আর উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। এই কারণেই প্রধানমন্ত্রী কার্নি ভারতকে আমন্ত্রণ জানানোর পেছনে অর্থনৈতিক ও বৈশ্বিক কারণের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং অনেক বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলের কেন্দ্রে রয়েছে।