মণিপুরে ফের উত্তপ্ত পরিস্থিতি, মেইতেই নেতাদের গ্রেফতারের পর ৫টি জেলায় ইন্টারনেট বন্ধ

মণিপুরে আবারও পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। খবর অনুযায়ী, মেইতেই নেতাদের গ্রেফতারের পর রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে মণিপুর সরকার তাৎক্ষণিক প্রভাব খাটিয়ে রাজ্যের পাঁচটি জেলায় পাঁচ দিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে।
এই প্রভাবিত জেলাগুলির মধ্যে ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, থৌবল, কাকচিং এবং বিষ্ণুপুর অন্তর্ভুক্ত। এর সাথে এই জেলাগুলিতে বেশি সংখ্যক মানুষের জমায়েতের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
উত্তেজনা ও গুজব এড়াতে পদক্ষেপ:
এই বড় সিদ্ধান্তটি রাজ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া গুজব এড়াতে নেওয়া হয়েছে। সরকারের আশঙ্কা, কিছু অসামাজিক উপাদান সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক বার্তা এবং মিথ্যা খবর ছড়িয়ে পরিস্থিতি খারাপ করতে পারে। সরকারের আদেশে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, এই ধরনের কার্যকলাপ মানুষের জীবন এবং সম্পত্তির ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে পারে। এই কারণেই মোবাইল ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ, ভিপিএন (VPN) এবং ডঙ্গল সহ সমস্ত সংশ্লিষ্ট পরিষেবা রাত ১১:৪৫টা থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মণিপুরের স্বরাষ্ট্র বিভাগের কমিশনার-সহ-সচিব এন. অশোক কুমার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, থৌবল, কাকচিং এবং বিষ্ণুপুর জেলাগুলিতে বিদ্যমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুক অবস্থা বিবেচনা করে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, কিছু অসামাজিক উপাদান সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার করতে পারে। তারা মানুষের অনুভূতি উস্কে দেওয়ার জন্য আপত্তিকর ছবি, বক্তব্য এবং উস্কানিমূলক ভিডিও ছড়ানোর চেষ্টা করতে পারে, যা রাজ্যের পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে।”
এনআইএ দ্বারা মেইতেই নেতাদের গ্রেফতারের খবর:
রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘টেঙ্গোল’-এর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকারীরা কোয়াকিথেল এবং উরিপোক এলাকায় রাস্তায় টায়ার এবং পুরনো আসবাবপত্র জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এই সময় রাজ্যসভার সাংসদ লেইশেম্বা সানাজাওবা-ও ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং প্রবীণ নিরাপত্তা কর্মীদের সাথে পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও-ও ভাইরাল হয়েছে যেখানে সানাজাওবা-কে বলতে দেখা যাচ্ছে, “আমরা শান্তি বজায় রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। যদি আপনারা এমন পদক্ষেপ নেন তাহলে শান্তি কীভাবে বজায় থাকবে? বিধায়কের সাথে আমাকেও গ্রেফতার করুন।”
জানা গেছে যে, মেইতেই নেতাদের গ্রেফতার জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA)-এর দল দুপুর প্রায় ২:৩০ মিনিটে করেছিল, যদিও এই খবরের এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে নিশ্চিতকরণ হয়নি। মণিপুরে ক্রমাগত অবনতিশীল পরিস্থিতি সরকার এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।