পাঁচ পাণ্ডব কেন নির্মাণ করেন কেদারনাথ ধাম? জানুন সেই রহস্য

কেদারনাথ মন্দির, হিন্দু ধর্মের এক অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান, যা উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল হিমালয় রেঞ্জে মন্দাকিনী ও সরস্বতী নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত। এটি ভগবান শিবের বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে অন্যতম, যেখানে বিশ্বাস করা হয় যে শিবের নাম উচ্চারণ করলেই আত্মার মুক্তি ঘটে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৫৮৩ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই মন্দির প্রায় ৫০০০ বছরের পুরোনো বলে ধারণা করা হয়। মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর পাণ্ডবরা কৌরব ও আত্মীয়-স্বজন হত্যার পাপ থেকে মুক্তি পেতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশে শিবের সন্ধানে বের হন এবং কেদারনাথসহ পঞ্চ কেদার স্থাপন করেন।
পাণ্ডবরা প্রথমে বেনারসে শিবের খোঁজ করলেও, শিব তাদের দর্শন না দিয়ে গাড়োয়াল এলাকায় ষাঁড়ের রূপ ধারণ করে আত্মগোপন করেন। দ্বিতীয় পাণ্ডব ভীম গুপ্তকাশীতে সেই ষাঁড়রূপী শিবকে চিনতে পেরে তাকে জাপটে ধরেন। শিব মাটির নিচে প্রবেশ করলেও পাণ্ডবদের কঠোর তপস্যায় খুশি হয়ে পাঁচ স্থানে আবির্ভূত হন, যা পঞ্চ কেদার নামে পরিচিত। এই পাঁচটি স্থানেই পাণ্ডবরা মন্দির নির্মাণ করেন। কেদারনাথের প্রধান পুরোহিতরা কর্ণাটকের ভীরাসাভিয়া সম্প্রদায়ের ব্রাহ্মণ, যাদের পূর্বপুরুষেরা ভগবান নরনারায়ণের সময় থেকে শিবের উপাসনা করতেন। মন্দিরটি বড় বড় পাথর দিয়ে ইন্টারলকিং সিস্টেমে তৈরি, যা এর নির্মাণ কৌশলকে রহস্যময় করে তোলে। প্রতি বছর এপ্রিল-মে মাসে অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে মন্দির খোলা হয় এবং কার্তিক পূর্ণিমার সময় নভেম্বর মাসে অতিরিক্ত ঠান্ডা ও বরফপাতের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এই ছয় মাস ভগবান কেদারনাথকে উখিমঠে নিয়ে আসা হয়। কথিত আছে, ছয় মাস মানুষ পূজা করে এবং বাকি ছয় মাস দেবতারা পূজা করেন। ১৩ থেকে ১৭ শতকে প্রায় ৪০০ বছর বরফের নিচে থেকেও মন্দিরটি অক্ষত ছিল, যা এক অলৌকিক ঘটনা।