ভারতের সঙ্গে কোন পরিকল্পনার ওপর কাজ করছে রাশিয়া?

পুতিন ভারত রাশিয়া সম্পর্ক: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার জন্য পুতিনের ওপর ক্ষুব্ধ এবং এ নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলছেন। অন্যদিকে, রাশিয়া চুপচাপ এশিয়ায় তার নতুন কৌশল তৈরি করছে, যেখানে ভারতকে বিশেষ স্থান দেওয়া হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হলো পশ্চিমা দেশগুলির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মোকাবিলা করা।
পুতিনের ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের অসন্তোষ বৃদ্ধি
ট্রাম্প যত বেশি পুতিনের উপর অসন্তুষ্ট হচ্ছেন, তত বেশি রাশিয়া ভারতের সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি এবং সম্পর্ক জোরদার করছে। রাশিয়া চায় যে, ভারত, রাশিয়া এবং চীনের পুরনো অংশীদারিত্ব (RIC) আবার শক্তিশালী করা হোক, যাতে কোয়াডের মতো পশ্চিমা গোষ্ঠীগুলিকে মোকাবিলা করা যায়।
ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধবিরতিতে বিলম্বের কারণে ট্রাম্পের অসন্তোষ আরও বেড়েছে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, কিয়েভ ট্রাম্পের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল, কিন্তু রাশিয়া তা প্রত্যাখ্যান করে এমন শর্ত রেখেছিল যা ইউক্রেনকে রাশিয়ান নিয়ন্ত্রণাধীন নয় এমন অঞ্চলগুলিও ছেড়ে দিতে বাধ্য করত।
এরপরে ট্রাম্প শান্তি আলোচনার আয়োজন করার প্রস্তাব দেন, কিন্তু মস্কোর দাবি – যেমন আমেরিকা কর্তৃক ক্রিমিয়াকে রাশিয়ান অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া – বিশেষজ্ঞদের সমালোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মাইকেল ম্যাকফল-এর মতো বিশেষজ্ঞরা এই শর্তগুলিকে “বিষাক্ত বড়ি (poison pills)” বলে অভিহিত করেছেন, যার উদ্দেশ্য কূটনীতিকে ব্যর্থ করা।
ভারতকে কাছে আনার চেষ্টা করছে রাশিয়া
এই পরিস্থিতি পুতিনকে বাধ্য করেছে পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক আবার শক্তিশালী করতে, যাতে আমেরিকার ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মোকাবিলা করা যায়। রাশিয়া এখন ভারতকে কাছে আনার চেষ্টা করছে। অস্ত্র চুক্তি করছে এবং তিন দেশের বৈঠক (রাশিয়া-ভারত এবং চীন) আবার শুরু করার চেষ্টা করছে, যাতে পশ্চিমা দেশগুলির প্রভাবকে ভারসাম্য করা যায়।
ভারতের পরিস্থিতি কিছুটা কঠিন
ভারতের পরিস্থিতিও কিছুটা কঠিন। বহু বছর ধরে ভারত রাশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কিনছে। রাশিয়া ভারতকে বহুবার এমন নতুন অস্ত্র দিয়েছে যা তারা নিজেও ব্যবহার করেনি, কিন্তু রাশিয়া-ভারত-চীন (RIC)-এর অংশীদারিত্ব ভারতের জন্য সহজ নয়। চীন পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং তাকে সামরিক ও পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ভারতের মনে হয় যে, যতক্ষণ চীন পাকিস্তানের পাশে থাকবে, ততক্ষণ এই ধরনের অংশীদারিত্ব ঠিকমতো চলতে পারবে না।
RIC-কে আমেরিকা-বিরোধী বলে মনে করা হয়। যদিও, ভারত এবং আমেরিকার সম্পর্ক গত কয়েক বছরে খুব ভালো হয়েছে। বিশেষ করে মোদি এবং ট্রাম্পের সময়ে প্রতিরক্ষা এবং প্রযুক্তিতে বড় সহযোগিতা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য রাশিয়া এবং চীনের সাথে যাওয়া কিছুটা কঠিন হতে পারে, কারণ এটি তার বর্তমান নীতির থেকে আলাদা বলে মনে হয়।