ভারতের প্রতিরক্ষায় আরও একটি বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর ২৬টি রাফাল-এম জেট এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর (IAF) ৩৬টি রাফাল জেট এখন তিনটি স্বদেশী মিসাইল – রুদ্রম-১ (Rudram-1), অস্ত্র এমকে১ (Astra Mk1) এবং স্মার্ট অ্যান্টি-এয়ারফিল্ড ওয়েপন (SAAW)-এ সজ্জিত হবে।

রাফাল জেটের চুক্তি

প্রথমে রাফাল জেটের কথা বলা যাক। নৌবাহিনী ২৬টি রাফাল-এম জেট ৭ বিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৬০,০০০ কোটি টাকা) মূল্যে কিনেছে। আইএএফ-এর কাছে ইতিমধ্যেই ৩৬টি রাফাল জেট রয়েছে। এই জেটগুলি এখন ভারতীয় মিসাইল দ্বারা সজ্জিত করা হবে, যা নৌবাহিনী এবং আইএএফ-এর শক্তিকে দ্বিগুণ করে দেবে।

রুদ্রম-১: শত্রুর রাডারকে বলুন বাই-বাই

রুদ্রম-১ এমন একটি মিসাইল, যা শত্রুর রাডার এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাকে লক্ষ্য করে। এটি ডিআরডিও (DRDO) দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এর পাল্লা ১৫০ কিলোমিটার। এর ওয়ারহেড ২০০ কিলোগ্রামের। অর্থাৎ, এটি দূর থেকে শত্রুর রাডারকে ধ্বংস করে দেবে। এটি ‘সাপ্রেশন অফ এনিমি এয়ার ডিফেন্স’ (SEAD) মিশনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। ভাবুন, রাডার ছাড়া শত্রুর সেনাবাহিনী কীভাবে লড়াই করবে?

অস্ত্র এমকে১: আকাশে আধিপত্য

এবার অস্ত্র এমকে১-এর কথা বলা যাক। এটি একটি বিয়ন্ড-ভিজ্যুয়াল-রেঞ্জ (BVR) মিসাইল, যার পাল্লা ১১০ কিলোমিটার। এটি তৈরি করতে মাত্র ১০ কোটি টাকা লেগেছে, যা আমেরিকার AIM-120 AMRAAM (১০৫-১২০ কিলোমিটার পাল্লা) এর চেয়ে সস্তা। অর্থাৎ, আমরা কম খরচে একটি মারাত্মক মিসাইল তৈরি করেছি। এই মিসাইল শত্রুর বিমানগুলিকে দূর থেকে লক্ষ্য করবে। এটি সু-৩০এমকেআই এবং তেজসের মতো জেটগুলিতে লাগানো যেতে পারে।

এসএএডব্লিউ (SAAW): এয়ারফিল্ডগুলিকে বিদায় বলুন

এসএএডব্লিউ অর্থাৎ স্মার্ট অ্যান্টি-এয়ারফিল্ড ওয়েপন, যা শত্রুর এয়ারফিল্ডগুলিকে ধ্বংস করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এর পাল্লা ১০০ কিলোমিটার। এটি প্রিসিশন-গাইডেড, অর্থাৎ নির্ভুলভাবে লক্ষ্য ভেদ করবে। ভাবুন, যদি শত্রুর এয়ারফিল্ডগুলিই ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে তাদের জেটগুলি কীভাবে উড়বে?

ডাসল্ট এভিয়েশনের মনোভাব

ডাসল্ট এভিয়েশন, যা রাফাল জেট তৈরি করে, প্রথমে সোর্স কোড শেয়ার করতে রাজি ছিল না। কিন্তু ভারত জোর দিয়েছিল যে, এই মিসাইলগুলি রাফালে লাগানো প্রয়োজন, যাতে আমরা বিদেশী মিসাইলের উপর নির্ভরশীল না থাকি। অবশেষে ডাসল্ট কো ম্পা নি রাজি হয়। এটি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র জয়।

রাফাল জেটগুলি এখন রুদ্রম-১, অস্ত্র এমকে১ এবং এসএএডব্লিউ দিয়ে সজ্জিত হয়ে ভারতের প্রতিরক্ষায় আরও শক্তি যোগাবে। এটি কেবল আমাদের বিমান শক্তিই বাড়াবে না, বরং আমাদেরকে বিদেশী অস্ত্রের উপর নির্ভরতা থেকেও মুক্তি দেবে। আগামী দিনে, এই মিসাইলগুলি শত্রুদের বিস্মিত ও বিচলিত করবে।