কিডনি পাচার চক্রের জালে হেভিওয়েটরা! আইনজীবীর ফোনে চাঞ্চল্যকর তথ্য

অশোকনগরে সক্রিয় কিডনি পাচার চক্রের পর্দা ফাঁস করল পুলিশ। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত আইনজীবী প্রদীপকুমার বরের ফোন থেকে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, এবার সেই ‘হেভিওয়েট’দের জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং তাদের নোটিস পাঠানোর কাজও শুরু হয়েছে। আইনজীবীর ল্যাপটপ ও মোবাইল ঘেঁটে কিডনি বিক্রি এবং পাচার সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ অশোকনগর থানার পুলিশের হাতে এসেছে। ধৃতের বয়ান এবং বাজেয়াপ্ত হওয়া ডিজিটাল ডিভাইস থেকে কিডনিদাতা, গ্রহীতা সহ একাধিক দালালের নামও পাওয়া গেছে।
এই চক্রের কার্যপ্রণালী ছিল অত্যন্ত সুচতুর। দালালরা চড়া সুদে টাকা ধার দিত এবং ঋণ পরিশোধের জন্য ঋণগ্রহীতাদের কিডনি বিক্রির ফাঁদে ফেলত। অশোকনগর এলাকার সুদখোর বিকাশ ঘোষ ওরফে শীতলকে গ্রেপ্তারের পরেই এই ভয়াবহ কিডনি পাচার চক্রের হদিশ মেলে। পরবর্তী তদন্তে অমিত জানা সহ আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জেরা করে আলিপুর আদালতের আইনজীবী প্রদীপকুমার বরের নাম সামনে আসে। পুলিশ জানতে পেরেছে, কিডনি দানের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যদপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়ার পর যে এফিডেভিট করাতে হয়, তা এই আইনজীবীই করিয়ে দিতেন। অভিযোগ, জেলা ও রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের ‘নট রেকমেন্ডেড’ হওয়া কেসগুলিও প্রদীপকুমারের মাধ্যমে আইনি সম্মতি পেয়ে যেত। এর জন্য তিনি একটি এফিডেভিট বাবদ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিতেন, যেখানে স্বাভাবিক খরচ ৫০০ টাকা। ‘নট রেকমেন্ডেড’ কেসের ক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ টাকা নিতেন তিনি। এই আইনজীবীর সঙ্গে পাচারচক্রের দালাল, দাতা ও গ্রহীতাদের যোগাযোগের প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদের গোটা পর্ব রেকর্ড করা হয়েছে এবং তার ল্যাপটপ, মোবাইল থেকে পাওয়া তথ্য ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।