কোর্টে আসামিকে চিনতে অস্বীকার, ২ পুলিশ কনস্টেবল বরখাস্ত!

বেতিয়া জেলায় কর্মরত কনস্টেবল পরমানন্দ রজক এবং রঞ্জিত কুমার-এর জন্য আদালতে আসামিকে চিনতে অস্বীকার করাটা বেশ ব্যয়বহুল প্রমাণিত হয়েছে। আদালতে “হোস্টাইল” হওয়ার পর পুলিশ সুপার ডা. শৌর্য সুমন এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে দু’জনকেই বরখাস্ত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সুপার ডা. শৌর্য সুমন সম্প্রতি প্রসিকিউশন অফিসার, পাবলিক প্রসিকিউটর এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে আদালতে বিচারাধীন মামলাগুলির পর্যালোচনা করেন। পর্যালোচনার সময় জানা যায় যে, ২০২৪ সালে সিক্তা থানায় কর্মরত কনস্টেবল পরমানন্দ রজক এবং রঞ্জিত কুমারের আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল। তারা সিক্তার একটি মামলার সাক্ষী ছিলেন। সাক্ষ্য দেওয়ার সময় এই দু’জন আসামিকে চিনতে অস্বীকার করেন। অথচ ওই মামলায় দুই কনস্টেবল নিজেরাই আহত হয়েছিলেন এবং তাদের সামনেই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ঘটনাটি হলো, ২০২৪ সালের ১২ এপ্রিল সিক্তা থানা এলাকার ঝুমকায় পুলিশ অভিযান চালাতে গিয়েছিল। ওই অভিযানে এই দুই কনস্টেবলও টিমের অংশ ছিলেন। অভিযানের সময় সিক্তা থানা কেস নম্বর ১৫১/২৩-এর আসামি শামীম আলম-কে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ টিমের ওপর হামলাও চালানো হয়েছিল। এতে দুই কনস্টেবল আহত হন এবং হামলাকারীরা জোর করে শামীম আলমকে ছাড়িয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই মামলায় দুই কনস্টেবল প্রত্যক্ষ সাক্ষী হওয়া সত্ত্বেও আদালতে আসামিকে চিনতে অস্বীকার করাটা এসপি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। এসপি এই ঘটনায় দুই কনস্টেবলের সঙ্গে আসামির যোগসাজশ থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি এটিকে নিজের কর্তব্য থেকে বিমুখ হওয়া, অনাচার, দায়িত্বহীনতা এবং সন্দেহজনক আচরণ আখ্যা দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে দু’জনকেই বরখাস্ত করেছেন। পুলিশ মুখপাত্র জানিয়েছেন, কর্তব্য অবহেলার জন্য কোনো পুলিশ কর্মী বা কর্মকর্তাকে রেহাই দেওয়া হবে না|
বেতিয়া শহরের কাছে মনুয়াপুল থানায় কর্মরত সাব-ইন্সপেক্টর আনন্দ শরীফ মিঞ্চ-কে পুলিশ সুপার ডা. শৌর্য সুমন তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করেছেন। একই সাথে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এসপি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। পুলিশ মুখপাত্র জানিয়েছেন, ৮ জুন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পুলিশের কাছে একটি ভিডিও আসে। ভিডিওতে দেখা যায়, একজন পুলিশ অফিসার একটি মামলা নিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে অশালীনভাবে গালিগালাজ করছেন এবং মারধর করছেন। ভিডিওটি যাচাই করার পর জানা যায় যে ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি হলেন সাব-ইন্সপেক্টর আনন্দ শরীফ মিঞ্চ, যিনি মনুয়াপুল থানায় কর্মরত। এসপি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে অবিলম্বে ওই সাব-ইন্সপেক্টরকে বরখাস্ত করেছেন।