নীরব ঘাতক রোগ: নাম না জানলে পা হারানোর ঝুঁকি! দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন!

নীরব ঘাতক রোগ: নাম না জানলে পা হারানোর ঝুঁকি! দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন!

যদি একদিন সকালে মোজা পরতে গিয়ে দেখেন আপনার পায়ের বড় আঙুলে কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকা ব্যথা কালো রঙে পরিণত হয়েছে, তাহলে এটি একটি গুরুতর সতর্ক সংকেত হতে পারে। এই ব্যথা এবং রঙের পরিবর্তন ‘পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ’ (Peripheral Artery Disease – PAD) নামক একটি গুরুতর অবস্থার কারণে হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে পা কাটার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।

এই কারণেই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, যুক্তরাজ্যের ভাস্কুলার সার্জারি ইউনিটগুলো এই রোগের দ্রুত এবং কার্যকর চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। লেস্টারের গ্লেনফিল্ড হাসপাতালে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যদি দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা হয়, তাহলে পা বাঁচানোর সম্ভাবনা প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়।

‘পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ’ কী এবং এর লক্ষণ কী?

পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ (PAD) হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে পায়ের রক্তনালীগুলো সরু হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়াটিই হৃদরোগের কারণ হয়। এই রোগে রক্ত ​​প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়, যার ফলে পায়ে ব্যথা, ক্ষত এবং কখনও কখনও গ্যাংরিনের মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই অবস্থাটি বিশেষ করে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী এবং ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।

এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে হাঁটার সময় পায়ে ব্যথা হওয়া, যাকে ‘ইন্টারমিটেন্ট ক্লডিকেশন’ বলা হয়, অন্যতম। সঠিক সময়ে চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু রোগ যত বাড়তে থাকে, রোগীর অপারেশন বা পায়ের আঙুল কেটে ফেলার প্রয়োজন হতে পারে।

গ্লেনফিল্ড হাসপাতালের গবেষণায় দেখা গেছে যে, যদি রোগীকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হয়, তাহলে অঙ্গচ্ছেদের ঝুঁকি ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। ফলাফলগুলো ইঙ্গিত দেয় যে যত দ্রুত চিকিৎসা হবে, পা হারানোর ঝুঁকি তত কম হবে। এই গবেষণা থেকে স্পষ্ট হয় যে পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজের চিকিৎসায় সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলোতে মনোযোগ দেওয়া হয়, তাহলে রোগীদের গুরুতর অবস্থায় পৌঁছানো থেকে রক্ষা করা যেতে পারে। এটি জরুরি যে মানুষ তাদের পায়ে যেকোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন, যেমন পায়ে ব্যথা, ক্ষত বা কালো দাগকে উপেক্ষা না করে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে। এছাড়াও, ধূমপান ত্যাগ, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার মতো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এই রোগের বৃদ্ধিকে প্রতিরোধ করতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *