মহাকাশে যুদ্ধের প্রস্তুতি চীনের, ৩৫০+ স্যাটেলাইটে গোপন অস্ত্র! ভারত কি ঝুঁকিতে?

মহাকাশে যুদ্ধের প্রস্তুতি চীনের, ৩৫০+ স্যাটেলাইটে গোপন অস্ত্র! ভারত কি ঝুঁকিতে?

আজকের যুদ্ধ আর শুধু ভূমি, জল বা আকাশে সীমাবদ্ধ নেই, বরং মহাকাশও এখন নতুন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। একদিকে চীন যেখানে লো আর্থ অরবিটে (LEO) স্যাটেলাইট ডগফাইট ড্রিল করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছে, অন্যদিকে ভারত SPADEX মিশন এবং মিশন শক্তি (ASAT)-এর মাধ্যমে নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ সামরিক সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। এয়ার মার্শাল আশুতোষ দীক্ষিতের মতে, চীন সম্প্রতি LEO-তে ‘স্পেস ডগফাইট ড্রিল’ করে দেখিয়ে দিয়েছে যে, তারা শুধু নজরদারি নয়, মহাকাশেও যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত।

এই ড্রিলের সময় চীন ইন্টেলিজেন্স, সার্ভিল্যান্স এবং রিকনাইসেন্স (ISR) এর জন্য ৩৫০টিরও বেশি স্যাটেলাইট মোতায়েন করেছে। ২০১০ সালে চীনের যেখানে মাত্র ৩৬টি স্যাটেলাইট ছিল, ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা ১০০০+ ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ৩৬০টি হলো ISR স্যাটেলাইট। এপ্রিল ২০২৪-এ চীন একটি স্বায়ত্তশাসিত অ্যারোস্পেস ফোর্স গঠন করেছে, যা সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন (CMC)-কে রিপোর্ট করে। তাদের LEO ‘ডগফাইটিং’ অনুশীলনের উদ্দেশ্য ছিল শত্রুর স্যাটেলাইটকে ট্র্যাক করা, জ্যাম করা এবং নিষ্ক্রিয় করা। এভাবে চীন স্যাটেলাইটগুলোকে অস্ত্র ব্যবস্থার সাথে সংযুক্ত করেছে। এর মাধ্যমে চীনের উদ্দেশ্য স্পষ্ট যে, তারা ভবিষ্যতের যুদ্ধগুলোতে মহাকাশকে একটি সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। যখন স্বदेशी প্রযুক্তি এবং আত্মনির্ভরতার কথা আসে, ভারতও পিছিয়ে নেই। ইসরো (ISRO) এবং ডিআরডিও (DRDO)-এর নেতৃত্বে ভারতও সেই সক্ষমতা অর্জন করেছে যা এতদিন কেবল উন্নত দেশগুলোর কাছে ছিল। ভারত SPADEX মিশন (Space Docking Experiment)-এর অধীনে দুটি স্যাটেলাইটের মধ্যে স্বয়ংক্রিয় ডকিং এবং আনডকিং সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এই সময় মহাকাশে ২৯,০০০ কিমি/ঘন্টা বেগে দুটি স্যাটেলাইটকে কাছাকাছি এনে তাদের দিক পরিবর্তন করা হয়েছিল। এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে মহাকাশ স্টেশন, অন-অরবিট রিপেয়ার এবং যুদ্ধকালীন স্যাটেলাইট ডকিংয়ের জন্য অপরিহার্য হবে। ভারত ২৭ মার্চ ২০১৯-এ ৩০০ কিমি উচ্চতায় নিজেদেরই একটি স্যাটেলাইটকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। এটি ছিল একটি ডাইরেক্ট-অ্যাসেন্ট কাইনেটিক কিল ওয়েপন। এর মাধ্যমে ভারত আমেরিকা, রাশিয়া এবং চীনের পর চতুর্থ ASAT সক্ষম দেশ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এখন ভারতের কাছে ক্ষমতা আছে যে, তারা শত্রুর যেকোনো স্যাটেলাইটকে ধ্বংস করতে পারে।


Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *