জগন্নাথের আসাম্পূর্ণ মূর্তি: গোপন রহস্য কী?

জগন্নাথের অসম্পূর্ণ মূর্তি: গোপন রহস্য কী?

জগন্নাথ রথযাত্রা ২০২৫-এর দেবস্নান পূর্ণিমায় লক্ষ লক্ষ ভক্ত পুরীর দ্বাদশ শতাব্দীর মন্দিরে ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার স্নান অনুষ্ঠান দেখতে জড়ো হয়েছেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমায় এই উৎসবে দেবতাদের মূর্তি গর্ভগৃহ থেকে স্নান মণ্ডপে আনা হয়। এই মূর্তিগুলি নিম কাঠ দিয়ে তৈরি, যা ভবিষ্য পুরাণে বিষ্ণু মূর্তির জন্য শুভ বলে গণ্য। জগন্নাথের মূর্তির জন্য নির্বাচিত গাছের কাণ্ডে শঙ্খ ও চক্রের প্রাকৃতিক ছাপ থাকতে হয় এবং চারটি শাখা তাঁর বাহু প্রতীকী করে। বলভদ্র ও সুভদ্রার মূর্তির জন্য হালকা রঙের নিম কাঠ ব্যবহৃত হয়, যা তাঁদের গায়ের রঙের প্রতীক। কিন্তু কেন এই মূর্তিগুলির হাত-পা নেই? এই প্রশ্ন পৌরাণিক গল্প ও গভীর প্রতীকবাদের দিকে নিয়ে যায়।

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন বিষ্ণুর ভৌত রূপ দেখতে চেয়েছিলেন। ঐশ্বরিক নির্দেশে তিনি নীল পাহাড়ে মন্দির নির্মাণ করেন এবং বিশ্বকর্মাকে মূর্তি তৈরির দায়িত্ব দেন। কিন্তু রাজার অধৈর্য্যে কাজ আসাম্পূর্ণ থেকে যায়। দেবদত্ত পট্টনায়েকের মতে, এই আসাম্পূর্ণতা জগন্নাথের ঐশ্বরিক সার্বজনীনতার প্রতীক, যিনি হাত ছাড়াই ভক্তদের আলিঙ্গন করেন। এই রূপ সমাজের প্রান্তিক মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও আসাম্পূর্ণতার গ্রহণযোগ্যতার বার্তা দেয়। গৌরব বালকৃষ্ণনের ব্লগে বলা হয়, ঐশ্বরিক কণ্ঠ ঘোষণা করেছিল যে এই আসাম্পূর্ণ মূর্তিই নিখুঁত। এই গল্প ভক্তদের মধ্যে জগন্নাথের অনন্য রূপের প্রতি ভক্তি ও কৌতূহল আরও গভীর করে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *