প্রতারণার রেইনকোট, মিথ্যের ট্যাক্সি! রাজা হত্যাকাণ্ডে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য, পায়ের তলার মাটি সরে যাবে!

মেঘালয়ের চাঞ্চল্যকর রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলায় শিলং পুলিশ গ্রেপ্তারকৃত পাঁচ অভিযুক্তকে নিয়ে এক বিশাল তথ্য উন্মোচন করেছে। পুলিশের মতে, এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল রাজ কুশওয়াহা। এটি কোনো চুক্তিভিত্তিক হত্যাকাণ্ড ছিল না, বরং ব্যক্তিগত আক্রোশ ও প্রতারণার এক বিপজ্জনক গল্প, যা রাজ কুশওয়াহার ‘অনুগ্রহ’ লাভের জন্য তার বন্ধুরা রচনা করেছিল। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সাল থেকেই শুরু হয়েছিল। এসপি বিবেক স্যেম জানিয়েছেন যে, রাজ দু’বার সোনমকে অদৃশ্য করার চেষ্টা করেছিল। প্রথমে সে সোনমকে নদীতে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। এরপর সে কোনো এক মহিলার মৃতদেহ এনে, সোনমের স্কুটি সহ জ্বালিয়ে আত্মহত্যাকে একটি মিথ্যা দৃশ্য হিসেবে সাজাতে চেয়েছিল, কিন্তু তার উভয় প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
১১ মে সোনমের সাথে রাজা রঘুবংশীর বিয়ে হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। দম্পতি এরপর কামাখ্যা মন্দিরে দর্শনের জন্য গুয়াহাটি পৌঁছান। এদিকে রাজ তার তিন বন্ধু বিশাল, আনন্দ এবং আকাশের সাথে মিলে পরবর্তী হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা তৈরি করে। গুয়াহাটিতে হত্যার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু তারা সফল হতে পারেননি। অবশেষে ১৯ মে, রাজ এবং তার সঙ্গীরা সোরা (চেরাপুঞ্জি) পৌঁছায়, যেখানে সোনম আগে থেকেই উপস্থিত ছিল। পার্কিংয়ে সোনম এবং তিন অভিযুক্তের দেখা হয়। সেখানেই রাজাকে হত্যা করা হয়। মৃতদেহ একটি গভীর খাদে ফেলে দেওয়া হয়। দুপুর ২টা ১৮ মিনিটে সকল অভিযুক্ত সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। আকাশের শার্টে রক্ত লাগার কারণে সোনম নিজের রেইনকোট তাকে দিয়ে দেয়। আকাশ AV পয়েন্টের কাছে রেইনকোটটি ফেলে দেয়। আনন্দ রাজার ভাড়া করা স্কুটিটি সোরা সীমান্তের কাছে ফেলে চলে যায়। হত্যাকাণ্ডের পর সোনম পালানোর সম্পূর্ণ পরিকল্পনা আগে থেকেই করে রেখেছিল। সে একটি বোরখা পরেছিল যা রাজ বিশালের মাধ্যমে পাঠিয়েছিল। সোনম ট্যাক্সিতে করে গুয়াহাটি পৌঁছে সেখান থেকে বাস ধরে শিলিগুড়ি যায়। এরপর একে একে পাটনা, আরা, লখনউ হয়ে ইন্দোর পৌঁছায়। পুলিশ একজন অভিযুক্তকে হেফাজতে নেওয়ার সাথে সাথেই রাজ তথ্য পেয়ে যায়। রাজ সোনমকে ফোন করে বলে, ‘তুমি যেখানেই থাকো, তোমার বাড়িতে ফোন করে বলো যে তুমি অপহরণকারীদের কবল থেকে বেরিয়ে ফিরে এসেছ।’ শিলং পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে রাজ (মূল পরিকল্পনাকারী), সোনম (রাজা রঘুবংশীর স্ত্রী) সহ বিশাল, আনন্দ, আকাশকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সকল জবানবন্দি ও ঘটনাক্রমের ভিত্তিতে দ্রুতই ‘ক্রাইম সিন’ পুনরায় তৈরি করা হবে, যাতে মামলাটি আদালতে দৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করা যায়।