মেঘালয়ে ইন্দোরের রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলায় প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য ফাঁস হচ্ছে। স্ত্রী সোনম সহ রাজা’র হত্যার সাথে জড়িত সকল অভিযুক্ত পুলিশের জালে বন্দি। কিন্তু এই হত্যা মামলাটি আবারও এক নতুন মোড় নিয়েছে।

এখন পর্যন্ত তদন্তে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, সোনম রঘুবংশীই রাজ কুশওয়াহা এবং আরও তিন অভিযুক্তের সাথে মিলে রাজাকে হত্যা করেছে। শুধুমাত্র এই কারণে যে, সে বিধবা হওয়ার পর রাজকে বিয়ে করতে পারবে। তবে পুলিশ এখন তৃতীয় একজন ব্যক্তির উপর সন্দেহ করতে শুরু করেছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, রাজ কুশওয়াহা কেবলই একটি মোहरा ছিল। সোনম কেবল রাজকে রাজা’র হত্যার জন্য ব্যবহার করেছে। একদিকে সোনম এই হত্যার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে রাজকে দেখাচ্ছে, অন্যদিকে রাজ এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সোনমকে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে দেখাচ্ছে।

টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোনমই এই পুরো ঘটনার আসল মাস্টারমাইন্ড। মনে করা হচ্ছে যে, রাজকে কেবল একটি মোহরা হিসেবেই ব্যবহার করা হয়েছে। সকল অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ তদারকি করা সিনিয়র কর্মকর্তারা বলেছেন – এমন মনে হচ্ছে যে, সোনম সবাইকে ফাঁদে ফেলে তাদের রাজাকে হত্যার জন্য ব্যবহার করেছে। রাজকে ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং অন্যদের অর্থের লোভ দেখিয়েছে।

এখন পর্যন্ত মনে করা হচ্ছিল যে, রাজই এই পুরো ঘটনার আসল ষড়যন্ত্রকারী। তাকে সোনমের প্রেমিক হিসেবেও দেখানো হচ্ছিল। রিপোর্টে সূত্র উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, এই ঘটনায় আরও বড় একটি খেলার রহস্য উন্মোচিত হতে পারে। পুলিশের সন্দেহ যে, সোনম তৃতীয় কোনো ব্যক্তির সাথে পালানোর পরিকল্পনা করছিল। রাজ এই বড় খেলা সম্পর্কে অজ্ঞাত ছিল এবং তাই সে সোনম রঘুবংশীকে সাহায্য করে যাচ্ছিল। এখন এই তৃতীয় ব্যক্তিটি কে, তা এখনো প্রকাশ হওয়া বাকি।

রাজ ‘ভাই’ হলে তৃতীয় ব্যক্তিটি কে?

এদিকে, সোনমের পরিবার এবং প্লাইউড কো ম্পা নিতে কর্মরত ব্যক্তিরা বারবার বলছেন যে, সোনম এবং রাজের মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। সোনমের ভাই গোবিন্দও বলেছেন – “রাজ সোনমকে দিদি বলতো এবং তিন বছর ধরে সোনম তাকে রাখি বেঁধে আসছে।” এমন পরিস্থিতিতে এখন প্রশ্ন উঠছে যে, যদি সোনম এবং রাজের মধ্যে সত্যিই এমন কোনো সম্পর্ক না থাকত, তাহলে সে কার জন্য তার স্বামীকে হত্যা করলো?

ক্রাইম সিন রি-ক্রিয়েট করা হবে

শিলং পুলিশ এবার ঘটনাস্থলে সোনম এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের নিয়ে যাবে। তারপর সেখানে ক্রাইম সিন রি-ক্রিয়েট করে প্রমাণ সংগ্রহ করবে। এরপর অভিযুক্তদের ইন্দোরে আনারও পরিকল্পনা রয়েছে। রাজা’র হত্যার পর সোনম ইন্দোরে কোথায় ছিল এবং কার কার সাথে দেখা করেছিল, তা তদন্তের পর নতুন দিক উন্মোচিত হতে পারে। বর্তমানে সকল অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জানা গেছে যে, যখন সোনমকে জেলে রাজের সাথে ভিডিও কলে কথা বলানো হয়, তখন সে কাঁদতে শুরু করে। একদৃষ্টিতে রাজের দিকে তাকিয়ে ছিল। তারপর সে নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেয়।