এয়ারপ্লেন মোড হলো মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট বা ল্যাপটপে থাকা একটি বিশেষ ফিচার। এটি চালু করলেই আপনার ডিভাইস মোবাইল নেটওয়ার্ক, ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ এবং জিপিএস-এর মতো সমস্ত ওয়্যারলেস সিগন্যাল পাঠানো এবং গ্রহণ করা বন্ধ করে দেয়। অর্থাৎ, কোনো কল পাঠানো বা গ্রহণ করা যায় না, এবং ইন্টারনেট বা কোনো ওয়্যারলেস ডিভাইসের সাথেও সংযোগ স্থাপন হয় না।

ফ্লাইটে কেন এটি চালু করা হয়?

হাজার হাজার ফুট উপরে, উড়ন্ত বিমানে অনেক ধরনের ইলেকট্রনিক সিস্টেম থাকে, যা নেভিগেশন এবং যোগাযোগের জন্য অপরিহার্য। যদি কোনো মোবাইল থেকে রেডিও সিগন্যাল নির্গত হতে থাকে, তাহলে সেগুলো বিমানের এই সংবেদনশীল সিস্টেমগুলোতে দখল দিতে পারে। এই কারণেই টেক-অফ এবং ল্যান্ডিং-এর সময় এয়ারপ্লেন মোড চালু করতে বলা হয় – যাতে কোনো অবাঞ্ছিত সিগন্যাল বিমানের উড়ানকে প্রভাবিত না করে।

ওয়াই-ফাই এবং ব্লুটুথ কি চালানো যাবে?

হ্যাঁ, এয়ারপ্লেন মোড চালু করার পরেও আপনি চাইলে ওয়াই-ফাই এবং ব্লুটুথ ম্যানুয়ালি চালু করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, এটি তখনই করবেন যখন এয়ারলাইন থেকে এর অনুমতি দেওয়া হয়। কিছু এয়ারলাইন, যেমন ভিস্তারা বা এমিরেটস, ফ্লাইটে ওয়াই-ফাই পরিষেবা দেয়, যার মাধ্যমে আপনি ইন্টারনেট চালাতে পারেন – শুধু কলিং সম্ভব হয় না।

কীভাবে বুঝবেন এয়ারপ্লেন মোড চালু আছে?

যখন আপনি এয়ারপ্লেন মোড চালু করেন, তখন আপনার ফোনের স্ক্রিনে একটি ছোট হাওয়াই জাহাজের আইকন দেখা যায়। এই আইকনটি নির্দেশ করে যে এখন আপনার ডিভাইস থেকে কোনো ওয়্যারলেস সিগন্যাল নির্গত হচ্ছে না।

এখনও কি এর প্রয়োজন আছে?

আজকাল প্রযুক্তি অনেক উন্নত হয়েছে এবং ফ্লাইটগুলিতে সিগন্যাল ম্যানেজমেন্টও উন্নত হয়েছে। 5G-এর মতো নতুন প্রযুক্তিগুলোতে রেডিও সিগন্যাল আরও স্মার্টভাবে হ্যান্ডেল করা হয়। তবুও, ডিজিসিএ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক এভিয়েশন এজেন্সিগুলি এখনও এয়ারপ্লেন মোডকে জরুরি বলে মনে করে – বিশেষ করে টেক-অফ এবং ল্যান্ডিং-এর সময়। এটি সতর্কতার একটি জরুরি মানদণ্ড, যা আপনার এবং সমস্ত যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

শুধু উড়ানেই নয়, আরও আছে সুবিধা

যদিও এটি বিমান ভ্রমণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, তবে এয়ারপ্লেন মোড মাটিতেও কাজ করে। যখন আপনার ব্যাটারি বাঁচাতে হয়, বা ফোন থেকে কিছুক্ষণের জন্য দূরে থাকতে হয়, তখন এই মোডটি খুব উপকারী প্রমাণিত হয়।

এয়ারপ্লেন মোড কেবল একটি প্রযুক্তিগত ফিচার নয়, বরং আপনার নিরাপত্তার সাথে জড়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পরের বার যখন আপনি প্লেনে বসবেন এবং ফোনকে এয়ারপ্লেন মোডে করতে বলা হবে, তখন এটিকে হালকাভাবে নেবেন না – এটি একটি ছোট অভ্যাস, যা বড় নিরাপত্তা দিতে পারে।