প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জি-৭ সম্মেলনে অংশ নিতে কানাডা সফরে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদির এই সফরের আগে মার্ক কার্নির সরকার খালিস্তানিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। ভারত-বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত খালিস্তানিদের ধরতে সরকার ‘প্রোজেক্ট পেলিকান’ (Project Pelican) নামে একটি অপারেশন চালাচ্ছে।

এই অভিযানের অংশ হিসেবে কানাডীয় পুলিশ একটি বড় ড্রাগ এবং সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের পর্দাফাঁস করেছে, যার খালিস্তান সমর্থকদের সাথে সন্দেহজনক সম্পর্ক রয়েছে।

পুলিশ কানাডায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ড্রাগ জব্দ করেছে, যেখানে ৪৭৯ কিলোগ্রাম কোকেন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মূল্য ৪৭.৯ মিলিয়ন ডলার। কানাডায় বসবাসকারী সাতজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সহ মোট নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ভারত-বিরোধী কার্যকলাপে অর্থের ব্যবহার

পুলিশের মতে, এই দলটি আমেরিকা এবং কানাডার মধ্যে বাণিজ্যিক ট্রাকিং রুট ব্যবহার করত। এর সম্পর্ক ছিল মেক্সিকান ড্রাগ কার্টেল এবং আমেরিকান ডিস্ট্রিবিউটরদের সাথে। জানানো হয়েছে যে, ড্রাগ ব্যবসা থেকে প্রাপ্ত অর্থ ভারত-বিরোধী কার্যকলাপ যেমন প্রতিবাদ, গণভোট এবং অস্ত্র কেনার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল। গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সন্দেহ করছে যে, পাকিস্তানের আইএসআই এই নেটওয়ার্ককে সমর্থন করছে, যারা কানাডায় খালিস্তানি গোষ্ঠীগুলিকে মেক্সিকান কোকেন এবং আফগান হেরোইন পাচারের জন্য ব্যবহার করছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাজগিট যোগেন্দ্ররাজা (৩১), মনপ্রীত সিং (৪৪), ফিলিপ টেপ (৩৯), অরবিন্দর পওয়ার (২৯), করমজিৎ সিং (৩৬), গুরুতেজ সিং (৩৬), সরতাজ সিং (৩৬), সরতাজ সিং (২৭), শিব ওঙ্কার সিং (৩১) এবং হাও টমি হুইন (২৭) অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদির কানাডা সফর

এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হয়েছে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই মাসের শেষে কানাডার কানানাসকিসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে চলেছেন। তার এই সফর কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির আমন্ত্রণের পর হচ্ছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা একটি পোস্টে প্রধানমন্ত্রী মোদি কার্নিকে তার সাম্প্রতিক নির্বাচনী জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং শীর্ষ সম্মেলনের আমন্ত্রণের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, ভারত এবং কানাডা, শক্তিশালী সম্পর্কযুক্ত প্রাণবন্ত গণতন্ত্র হিসেবে, নতুন শক্তি এবং ভাগ করা লক্ষ্য নিয়ে একসাথে কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন যে, তিনি শীর্ষ সম্মেলনে কার্নির সাথে দেখা করার জন্য উৎসুক।

জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং কার্নির মধ্যে একটি বৈঠকও হবে। এই সাক্ষাতে খালিস্তানের ইস্যুটি উঠতে পারে। ভারত খালিস্তানিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ দ্রুত করার দাবি জানাতে পারে। জাস্টিস ট্রুডোর কার্যকালে কানাডায় খালিস্তানিদের মনোবল উচ্চ ছিল। ট্রুডোর নীতির কারণে ভারত এবং কানাডার সম্পর্ক খারাপ হয়ে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ট্রুডো খালিস্তানপন্থী নিজ্জরের জন্য আওয়াজ তুলেছিলেন এবং ভারত-এর বিরুদ্ধে প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ করেছিলেন। ভারত-এর সাথে সংঘাত ট্রুডোর জন্য ভারী পড়েছিল এবং তিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন।