৪৫ বারের আঘাতের বদলে ৪০ বছরের জেল, প্রেমিকার হত্যার দায়ে অভিযুক্তকে আদালতের এই শাস্তি

৪৫ বারের আঘাতের বদলে ৪০ বছরের জেল, প্রেমিকার হত্যার দায়ে অভিযুক্তকে আদালতের এই শাস্তি

কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) একটি রায় আজকাল আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ডের (death penalty) সাজা পরিবর্তন করে আসামিকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। আসামি তার প্রেমিকার উপর ৪৫ বার ছুরি দিয়ে হামলা চালিয়েছিল, যার ফলে তার মৃত্যু হয়েছিল।

বিচারপতি দেবাঙ্গসু বসাক (Justice Debangsu Basak) এবং সাবার রশিদির (Shabbar Rashidi) বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন।

মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বহরমপুরের (Baharampur) গোরাবাজারে (Gorabazar) ২০২২ সালের ২ মে সন্ধ্যায় সুতপা চৌধুরী (Sutapa Chowdhury) তার মেস থেকে ফিরছিলেন, সে সময় অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরী (Sushanta Chowdhury) তাকে রাস্তায় ঘিরে ফেলে এবং তার উপর ছুরি দিয়ে বেশ কয়েকবার আঘাত করে। আদালতে পেশ করা রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে, অভিযুক্ত প্রায় ৪৫ বার ছুরি দিয়ে হামলা চালিয়েছিল। এরপর পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এবং তার বিরুদ্ধে চার্জশিট (chargesheet) পেশ করে।

২০২৩ সালের আগস্ট মাসে বহরমপুরের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট (Fast Track Court) সুশান্ত চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। সুশান্ত চৌধুরী সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আপিল করেছিলেন, যার শুনানিতে হাইকোর্ট ফাঁসির সাজা বাতিল করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড (life imprisonment) দিয়েছে।

সম্পর্ক ছিন্ন করায় ক্ষুব্ধ ছিল অভিযুক্ত
অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরী ১৯ বছর বয়সী তার প্রেমিকার পক্ষ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করায় ক্ষুব্ধ ছিল। এর পাশাপাশি প্রেমিকার অন্য কারো সাথে মেলামেশাও সে পছন্দ করত না। অভিযুক্তের সন্দেহ ছিল যে তার প্রেমিকা অন্য কারো সাথে দেখা করেছে। এই রাগের বশেই অভিযুক্ত তার উপর হামলা চালায়।

৪০ বছরের সাজা এবং ৫০ হাজার টাকার জরিমানা
বহরমপুরের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট সুশান্ত চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। এই সাজাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। আদালত মৃত্যুদণ্ডের সাজা পরিবর্তন করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। অভিযুক্তকে আদালত ৪০ বছরের সাজা সহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে।

অনলাইনে অস্ত্র চেয়েছিল
অভিযুক্ত তার প্রেমিকাকে হত্যার জন্য সম্পূর্ণ পরিকল্পনা করেছিল। সে অনলাইনে ছুরি কিনেছিল এবং রাস্তায় দেখা হওয়া লোকজনকে ভয় দেখানোর জন্য একটি নকল বন্দুকও (fake gun) কিনেছিল। যাতে সে যখন মেয়েটির উপর হামলা করবে তখন তাকে কেউ থামাতে না পারে। যদিও এই ঘটনা যখন ঘটেছিল, তখন সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন এক পথচারী পুরো ঘটনার ভিডিও (video) তৈরি করে ফেলেন, যার সাহায্যে আদালতের রায় দিতেও সুবিধা হয়েছিল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *