ইজরায়েল আবারও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা বর্ষণ করেছে, ট্রাম্পের হুমকির পর নেতানিয়াহু অ্যাকশনে

ইজরায়েল আবারও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা বর্ষণ করেছে, ট্রাম্পের হুমকির পর নেতানিয়াহু অ্যাকশনে

মধ্যপ্রাচ্যে ইজরায়েল এবং ইরানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। একদিকে যেখানে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) ইরানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অন্যদিকে জানা যাচ্ছে যে, ইজরায়েল আবারও ইরানের উপর হামলা শুরু করেছে।

ইরানি মিডিয়ার (Iranian media) মতে, ইজরায়েলি সেনাবাহিনী আবারও পারমাণবিক সাইটে (nuclear site) হামলা শুরু করেছে।

ইজরায়েল আবারও ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটিতে বোমা বর্ষণ করেছে

জানা যাচ্ছে যে, ইজরায়েল শিরাহ (Shiraz) এবং তাবরিজ (Tabriz) শহরগুলোর পাশাপাশি নাতাঞ্জ পারমাণবিক সাইটেও (Natanz Nuclear Site) আবারও হামলা শুরু করেছে। এর আগে ইজরায়েলি সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফ্রিন (Brigadier General Effie Defrin) বলেছেন যে, ইজরায়েলি হামলায় ইরানের প্রধান পারমাণবিক সাইটটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেছিলেন যে, এই অভিযান আরও দীর্ঘ হতে পারে, যার স্পষ্ট ইঙ্গিত হল ইজরায়েল থামবে না এবং তারা এখনও ইরানের উপর আরও হামলা চালাবে

ইরানের অনেক সামরিক কমান্ডারের মৃত্যু

ইজরায়েল শুক্রবার (১৩ জুন ২০২৫) ভোরে ইরানের পারমাণবিক সাইট এবং সামরিক কমপ্লেক্সে (military complex) হামলা চালানোর জন্য অপারেশন রাইজিং লায়ন (Operation Rising Lion) শুরু করে। এই হামলায় ইরানের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কমান্ডার এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। নেতানিয়াহু (Netanyahu) বলেছেন, “আমরা একটি অত্যন্ত সফল প্রাথমিক হামলা করেছি। ঈশ্বরের সাহায্যে আমরা আরও অনেক অর্জন করতে যাচ্ছি।”

নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, “আমরা ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির (nuclear weapons program) কেন্দ্রে হামলা করেছি। আমরা নাতাঞ্জের ইরানের প্রধান সমৃদ্ধকরণ সুবিধা (enrichment facility) লক্ষ্য করেছি। আমরা ইরানি (পারমাণবিক) বোমা নিয়ে কাজ করা ইরানের প্রধান পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করেছি। আমরা ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির (ballistic missile program) কেন্দ্রেও হামলা করেছি।” তিনি ইরানি পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে অস্তিত্বের জন্য হুমকি বলে আখ্যা দিয়েছেন।

ইরানি প্রেসিডেন্ট ইজরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন

ইরানও এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যে, ইজরায়েলের করা হামলায় তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (air defense system) এবং পারমাণবিক সাইটগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও, এই হামলায় ইরানি সেনা প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি (Mohammad Bagheri) এবং ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (Islamic Revolutionary Guard Corps) কমান্ডার হুসেন সালামীর (Hossein Salami) মৃত্যুও হয়েছে।

ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান (Masoud Pezeshkian) জাতির উদ্দেশে তার ভাষণে ইজরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। রয়টার্সের (Reuters) রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি বলেছেন যে, ইরানের প্রতিক্রিয়া এতটাই ভয়াবহ হবে যে ইজরায়েল অনুতপ্ত হবে। তিনি ইরানের জনগণকে তাদের নেতৃত্বের উপর ভরসা রাখতে এবং তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধও করেছেন।

ট্রাম্পের ইরানকে হুঁশিয়ারি

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ট্রাম্প বলেছেন যে, ইরান যদি চুক্তি (deal) না করে তাহলে ধ্বংসযজ্ঞ হবে। তিনি বলেছেন যে, পরবর্তী হামলা আরও ভয়াবহ হবে। ট্রাম্প বলেছেন, “দেরি হওয়ার আগেই ইরান চুক্তি করে নিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে এ পর্যন্ত সেরা এবং সবচেয়ে মারাত্মক সামরিক অস্ত্র তৈরি করে এবং ইজরায়েলের কাছে এর বিশাল ভান্ডার রয়েছে। আগামী দিনে আরও বড় কিছু ঘটতে পারে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *