বাহ ইউপি! এই শহরের মানুষ এক মাসে গলাধঃকরণ করল ৩২ কোটি টাকার মদ!

উত্তরপ্রদেশের আমেঠি জেলা প্রায়শই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। এই জেলায় অল্প সময়ের ব্যবধানে এমন কিছু ঘটে যা সবার নজর আমেঠির দিকে নিয়ে আসে। তবে এবার আমেঠি মদ্যপায়ীদের কারণে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। কারণ এই জেলার মদ্যপায়ীরা এতটাই বিপুল পরিমাণে মদ পান করেছে যে গোটা অযোধ্যা মণ্ডলে আমেঠি জেলা মদ বিক্রিতে প্রথম স্থান অধিকার করেছে।

আমেঠি জেলার আবগারি বিভাগের রেকর্ড অনুযায়ী, মে মাসের ৩১ দিনে ৩২ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছে। এর পর উত্তরপ্রদেশ সরকারের ড্যাশবোর্ডে আমেঠি জেলা সপ্তম স্থানে পৌঁছে গেছে। জেলা আবগারি আধিকারিক অখিলেশ কুমার আর্য জানিয়েছেন যে, উত্তরপ্রদেশ সরকারের নতুন আবগারি নীতির কারণে মে মাসে আমেঠি জেলায় দেশি ও বিদেশি মদ বিক্রিতে রেকর্ড হয়েছে। এর ফলে আবগারি বিভাগের আয় বেড়েছে। কারণ মে মাসে আবগারি বিভাগকে ২৪.৫ কোটি টাকার মদ বিক্রির লক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল, যার বিপরীতে বিভাগ ৩২ কোটি টাকার মদ বিক্রি করেছে। এই রেকর্ড বিক্রির প্রধান কারণ আবগারি নীতির পরিবর্তন এবং বৈবাহিক মরসুম।

নীতিতে পরিবর্তন এবং নেশামুক্তি অভিযানের প্রশ্ন

রাজ্য সরকার ২০২৫ সালের মার্চ মাসে আবগারি নীতিতে পরিবর্তন এনেছে, যেখানে বিদেশি মদ ও বিয়ারের দোকানগুলিকে একত্রিত করে ‘কম্পোজিট দোকান’ তৈরি করা হয়েছে। এর ভিত্তিতে আবেদনকারী ব্যক্তিদের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এর ফলে মদ্যপায়ীরা একই দোকানে বিয়ার এবং বিদেশি মদ উভয়ই সহজে পেয়ে যাচ্ছেন। গত আর্থিক বছরে আমেঠি জেলায় ৪৩টি বিয়ারের দোকান এবং ৪৭টি বিদেশি মদের দোকান ছিল। নতুন আবগারি নীতির পর ২০২৫ সালের এপ্রিল মাস থেকে কম্পোজিট দোকানের সংখ্যা বেড়ে ৮৫ হয়েছে, যার ফলে মদের সহজলভ্যতা এবং বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে।

একই সঙ্গে আবগারি আধিকারিক এও জানিয়েছেন যে, আমেঠি জেলায় অবৈধ মদের বিরুদ্ধেও ক্রমাগত কড়াকড়ি করা হচ্ছে। আবগারি বিভাগ এবং আমেঠি পুলিশের কর্মকর্তাদের সহায়তায় জেলায় অবৈধ মদ প্রতিরোধে অনেকটাই সাফল্য এসেছে। এর ফলস্বরূপ, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত লক্ষ্যের চেয়ে ১৩০.৬৩ শতাংশ বেশি মদ বিক্রি হয়েছে। যেখানে এক দিকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আসছে এবং আবগারি বিভাগের প্রশংসা হচ্ছে, সেখানে এর অন্য একটি দিকও রয়েছে। আমেঠিতে মদ্যপায়ীদের সংখ্যা এতটাই বেড়ে গেছে যে মদ ছাড়া তাদের ঘুম আসে না। তারা মদ পান করে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় অপরাধ করে। একদিকে আমেঠি পুলিশ ‘নেশামুক্ত আমেঠি অভিযান’ চালায়, যেখানে অবৈধ মদ, গাঁজা এবং স্ম্যাক সেবন ও বিক্রয়কারীদের ধরে জেল হাজতে পাঠিয়ে নিজেদের ‘গুড ওয়ার্ক’ দেখায়। অন্যদিকে, সরকার ও তার আবগারি বিভাগ এদের লাইসেন্স দিয়ে নিয়ম অনুযায়ী মাদকের অবাধ স্বাধীনতা দেয়, যা রীতিমতো হাস্যকর।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *