ইরান শত্রু গুনতে থাকল, আর বিশ্বস্ত সিরিয়া ইসরায়েলকে দুটি বড় সাহায্য করল

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান যুদ্ধে এমন একটি দেশ আছে, যা কোনো ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা না করলেও তার নীরবতা এবং সিদ্ধান্ত দিয়ে চমকে দিয়েছে। একসময় ইরানের বিশ্বস্ত মিত্র সিরিয়া, এখন সেই ইরানেরই সমস্যা বাড়িয়ে তুলছে।
এদিকে, তুরস্ক, সৌদি আরব, মিশর-এর মতো অনেক দেশ ইসরায়েলের কার্যকলাপের প্রকাশ্যে নিন্দা করেছে।
কিন্তু এই সমস্ত বিবৃতির মধ্যে সিরিয়ার নতুন সরকার আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বে সবচেয়ে বেশি আশ্চর্যজনক নীরবতা পালন করেছে। এবং এই সবই ঘটছে সিরিয়ার নতুন সরকারের নেতৃত্বে, যারা ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে কেবল নীরবই থাকেনি, বরং পরোক্ষভাবে দুটি বড় উপায়ে তাকে সাহায্যও করেছে।
১. সিরিয়ার আকাশ ইসরায়েলের পথ
১৩ জুন থেকে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর ইরানও শত শত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এই পুরো সংঘর্ষে সিরিয়ার আকাশসীমা একটি বাফার জোন হয়ে উঠেছে, যেখান থেকে ইসরায়েলি ফাইটার জেটগুলি উড়ে যাচ্ছে এবং আমেরিকার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে। দক্ষিণ সিরিয়ার দারা এবং কুনেইতারায় ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পড়ছে, ক্ষেত পুড়ছে, বাড়িঘর ধ্বংস হচ্ছে কিন্তু সিরিয়া সরকার নীরব। কোনো নিন্দা নেই, কোনো বিবৃতি নেই।
২. ২১টি মুসলিম দেশ বলল, সিরিয়া অনুপস্থিত
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মিশরের নেতৃত্বে ২১টি মুসলিম দেশ একটি যৌথ বিবৃতি জারি করেছে, যেখানে ইসরায়েলি হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করা হয়েছে। সৌদি আরব, তুরস্ক, পাকিস্তান, ইরাকের মতো দেশগুলি এতে অন্তর্ভুক্ত ছিল কিন্তু সিরিয়া অনুপস্থিত ছিল। এমনকি ইরাক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে অভিযোগ দায়ের করেছে, কিন্তু সিরিয়া পুরোপুরি নীরব রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে সিরিয়ার উচিত ছিল জাতিসংঘ সনদের ৩৫ এবং ৫১ অনুচ্ছেদের অধীনে নিরাপত্তা পরিষদে অভিযোগ দায়ের করা।
নীরবতার কারণ? আমেরিকা ও ইউরোপের সাথে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা
সিরিয়ার নতুন সরকার ডিসেম্বর ২০২৪ সালে ক্ষমতায় আসে যখন বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়। নতুন সরকার শুরু থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে ইরানি মিলিশিয়াদের এখন দেশে সহ্য করা হবে না, এবং সিরিয়ার জমি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সবই আমেরিকা এবং ইউরোপীয় দেশগুলির সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের কৌশলের অংশ। এখন যখন ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধ পুরোদমে চলছে, সিরিয়া নিজেকে নিরপেক্ষ এবং নির্ভরযোগ্য দেখানোর সুযোগ পেয়েছে, যার মূল্য ইরানকে দিতে হচ্ছে।