ব্রহ্মোসেরও বাপ হবে ET-LDHCM, গতি দেখে পাকিস্তান-চীনের ঘাম ছুটবে, জেনে নিন এর বৈশিষ্ট্য

বিশ্বে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং পাকিস্তান-তুরস্কের ঘনিষ্ঠতা দেখে ভারত সতর্ক হয়েছে। এই কারণেই ভারত তার প্রতিরক্ষা শক্তিকে ক্রমাগত শক্তিশালী করতে ব্যস্ত।
এই ধারাবাহিকতায়, শীঘ্রই একটি নতুন হাই-টেক ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে, যার নাম এক্সটেন্ডেড ট্র্যাজেক্টরি লং ডিউরেশন হাইপারসোনিক মিসাইল (Extended Trajectory Long Duration Hypersonic Missile – ET-LDHCM)। প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) প্রজেক্ট বিষ্ণুর (Project Vishnu) অধীনে এই হাইপারসোনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করতে যাচ্ছে। মনে করা হচ্ছে যে, এই হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্রহ্মোসের চেয়েও অনেক গুণ দ্রুত হবে, যা পাকিস্তান এবং চীনের মতো শত্রু দেশগুলির ঘাম ছুটিয়ে দেবে।
এই ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্পূর্ণভাবে স্বদেশী হবে। ব্রহ্মোস, অগ্নি-৫ এবং আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রের সাফল্যের পর এখন DRDO এই প্রকল্পের উপর কাজ করছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ভারত বিশ্বের শীর্ষ সামরিক শক্তিগুলির মধ্যে অনেকটাই এগিয়ে যাবে। DRDO-এর এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ অভিযানকেও নতুন শক্তি দেবে।
ব্রহ্মোসের থেকেও অনেক এগিয়ে থাকবে ET-LDHCM
প্রজেক্ট বিষ্ণুর অধীনে তৈরি হচ্ছে এক্সটেন্ডেড ট্র্যাজেক্টরি লং ডিউরেশন হাইপারসোনিক মিসাইল (ET-LDHCM) সম্পূর্ণভাবে স্বদেশী। এই ক্ষেপণাস্ত্র ম্যাক-৮ গতিতে (প্রায় ১১,০০০ কিমি/ঘণ্টা) শত্রুর ঘাঁটিকে কয়েক মিনিটের মধ্যে ধ্বংস করতে পারে। মনে করা হচ্ছে যে, এটি ব্রহ্মোসের থেকেও অনেক ভালো হবে। যেখানে ব্রহ্মোস ম্যাক-৩ গতিতে (৩,৬৭৫ কিমি/ঘণ্টা) আঘাত হানে, সেখানে ET-LDHCM তার থেকে তিন গুণ বেশি দ্রুত হবে।
এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লাও ১,৫০০ কিলোমিটার হবে, যেখানে ব্রহ্মোসের পাল্লা প্রথমে ২৯০ কিমি ছিল, যা বাড়িয়ে ৪০০-৪৫০ কিমি করা হয়েছিল। অর্থাৎ, পাল্লার দিক থেকেও এটি ব্রহ্মোসের চেয়ে তিন গুণ বেশি শক্তিশালী। শুধু তাই নয়, এই ক্ষেপণাস্ত্র ১,০০০ থেকে ২,০০০ কেজি পর্যন্ত প্রচলিত বা পারমাণবিক ওয়ারহেড (Warhead) বহন করতে পারে এবং কম উচ্চতায় উড়ে রাডারকে ফাঁকি দিতে পারে।
এই ক্ষেপণাস্ত্রের বিশেষত্ব কী?
ET-LDHCM-এ স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন (Scramjet Engine) ব্যবহার করা হয়েছে, যা বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে দহন করে, রোটেটিং কম্প্রেসরের সাহায্যে নয়। এর ফলে এই ক্ষেপণাস্ত্র হাইপারসোনিক গতি অর্জন করে।
এই ক্ষেপণাস্ত্র স্থল, বায়ু বা সমুদ্র – যেকোনো জায়গা থেকে উৎক্ষেপণ করা যেতে পারে, যার ফলে ভারতের কৌশলগত শক্তি অনেক গুণ বেড়ে যায়।
এর সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো পথ পরিবর্তন করার ক্ষমতা। সাধারণ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (Ballistic Missile) বিপরীতে, এই ক্ষেপণাস্ত্র উড়ানের সময় তার পথ পরিবর্তন করতে পারে এবং শত্রুর ঘাঁটিগুলোকে অত্যন্ত নির্ভুলতার সাথে ধ্বংস করতে পারে।
এটি ২,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও অবিরাম কাজ করতে পারে, যা এটিকে আরও মারাত্মক করে তোলে।
ভারতের জন্য বড় অস্ত্র তৈরি হবে
এখন পর্যন্ত এমন হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি শুধুমাত্র রাশিয়া, আমেরিকা এবং চীনের কাছেই আছে। যদি ET-LDHCM-এর পরীক্ষা সফল হয়, তাহলে ভারত এই অভিজাত ক্লাবে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। এই ক্ষেপণাস্ত্র শুধু পাকিস্তানের জন্য প্রতিশোধমূলক শক্তি হবে না, বরং চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তিকে উন্নত করার ক্ষেত্রেও ভারতের একটি বড় হাতিয়ার হয়ে উঠবে।