ভারতে ভরসা দেখাল না, ট্রাম্পের ‘তিন দেশের’ চুক্তি আসাম্পূর্ণ!

ভারতে ভরসা দেখাল না, ট্রাম্পের ‘তিন দেশের’ চুক্তি অসম্পূর্ণ!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) আবারও তার ‘ইভেন্ট পলিটিক্স’-এর জন্য আলোচনায়। এবারের বিষয়টি ছিল পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল অসিম মুনিরকে (Asim Munir) হোয়াইট হাউসে (White House) ডেকে লাঞ্চ করানো।

কিন্তু লাঞ্চের চেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে ট্রাম্পের সেই চেষ্টা, যেখানে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) এবং মুনিরের ‘আকস্মিক’ মুখোমুখি সাক্ষাত ঘটাতে চেয়েছিলেন।

আসলে, ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী মোদিকে কানাডা (Canada) থেকে ফেরার পথে আমেরিকায় আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সূত্র অনুযায়ী, ১৮ জুন ট্রাম্প এবং মোদির মধ্যে ৩৫ মিনিটের ফোনালাপও (Phone Conversation) হয়, যেখানে ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেন যে প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা আসুন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদি ‘ব্যস্ত কর্মসূচির’ কথা বলে এই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন।

এখন প্রশ্ন উঠছে – ট্রাম্প কি সত্যিই মোদি এবং মুনিরকে একই মঞ্চে এনে বিশ্বের কাছে শান্তির ‘ডেমো’ দেখাতে চেয়েছিলেন? ট্রাম্পের উদ্দেশ্য ছিল যে তিনি নিজেকে ভারত-পাক (India-Pak) যুদ্ধবিরতির (Ceasefire) স্থপতি প্রমাণ করতে পারবেন, যা তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের (Nobel Peace Prize) দিকে নিয়ে যাবে।

এই পরিস্থিতিতে, ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে মুনিরকে লাঞ্চের জন্য ডেকেছিলেন, কিন্তু কোনো ছবি প্রকাশিত হয়নি, কোনো প্রেস ব্রিফিংও হয়নি – যা ট্রাম্পের জন্য অত্যন্ত অস্বাভাবিক। এই গোপন বৈঠক নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আনা কেলি (Anna Kelly) জানান যে, মুনির নিজেই ট্রাম্পের কাছে আবেদন করেছিলেন যে ভারত-পাক যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হোক। এই কারণেই ট্রাম্প তার অবস্থান থেকে নেমে এসে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের সাথে দেখা করেন।

ট্রাম্প তার বিবৃতিতে বলেছেন, “আমি দুটি পারমাণবিক শক্তির (Nuclear Powers) মধ্যে যুদ্ধ থামিয়েছি। মোদি একজন চমৎকার নেতা এবং পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও আলোচনা হয়েছে। আমি শান্তি চাই।” কিন্তু বাস্তবতা হলো, ভারত পাকিস্তানের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরাসরি সামরিক স্তরে যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী নির্ধারণ করেছিল – কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়া।

প্রধানমন্ত্রী মোদি জি-৭ সম্মেলনে (G7 Summit) স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন যে, সন্ত্রাসবাদ ছড়ানো দেশগুলোর তুলনা সন্ত্রাসবাদের শিকার দেশগুলোর সাথে করা যায় না। ইঙ্গিত স্পষ্ট ছিল – আমেরিকা এবং পাকিস্তানের ভারতের নিরাপত্তা নীতিতে (Security Policy) অনুপ্রবেশের কোনো প্রয়োজন নেই।

এখন এই প্রশ্নও উঠছে যে, ট্রাম্পের কাছে পাকিস্তান হঠাৎ এত প্রিয় কেন মনে হতে লাগল? সেই পাকিস্তান, যারা ওসামা বিন লাদেনের (Osama bin Laden) মতো সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়েছিল। এর জবাব হলো – নোবেলের আকাঙ্ক্ষা। মুনিরের পক্ষ থেকে শান্তি পুরস্কারের আবেদন ট্রাম্পকে পাকিস্তানের সাথে ‘পাবলিক রিলেশন’ (Public Relation) শক্তিশালী করার পথে নিয়ে এসেছে।

ভারত-পাক যুদ্ধবিরতির বাস্তবতা সেটাই, যা অপারেশন সিঁদুর (Operation Sindoor) সবাইকে দেখিয়েছে – পাকিস্তান মাথা নত করেছে, ভারত সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু যদি আবারও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হয়, তাহলে ভারত জবাব দিতে পিছিয়ে থাকবে না – হোয়াইট হাউসে যে লাঞ্চই হোক না কেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *