ইজরায়েলের স্টক এক্সচেঞ্জে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

ইজরায়েলের স্টক এক্সচেঞ্জে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা এখন চরমে। ইরান ইজরায়েলের উপর একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার ফলে তেল আবিবের বিখ্যাত স্টক এক্সচেঞ্জ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আল জাজিরার রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরান ২৫টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা ইজরায়েলের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়াও, একটি হাসপাতালেও হামলা হয়েছে, যেখানে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইজরায়েলও পাল্টা হামলা চালিয়ে ইরানের বেশ কয়েকটি ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে, যার মধ্যে ইরানের পারমাণবিক সাইটগুলোও অন্তর্ভুক্ত।

ইজরায়েলের স্টক এক্সচেঞ্জে বড় ধরনের হামলা

ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা নতুন কিছু নয়, তবে এবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আল জাজিরার সর্বশেষ রিপোর্ট অনুসারে, ইরান ১৯ জুন ২০২৫, বুধবার ইজরায়েলের তেল আবিব শহরে ২৫টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর প্রধান লক্ষ্য ছিল তেল আবিব স্টক এক্সচেঞ্জের (TASE.TA) ভবন। এই ভবনটি ইজরায়েলের অর্থনৈতিক কার্যকলাপের কেন্দ্র, এবং এর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া দেশটির জন্য একটি বড় ধাক্কা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পুরো শহরে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। স্টক এক্সচেঞ্জ ভবন থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায় এবং এর অনেক অংশ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। যদিও, ভবনের ভিতরে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বা কতজন হতাহত হয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়, তবে এটা নিশ্চিত যে এই হামলা ইজরায়েলের অর্থনীতিতে গভীর আঘাত হানবে।

তেল আবিব স্টক এক্সচেঞ্জ গত কিছুদিন ধরে ভালো পারফর্ম করছিল। গত এক মাসে এতে ৩.২৪ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল, যখন গত ৬ মাসে ৪০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু এই হামলার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে যদি যুদ্ধের পরিস্থিতি বজায় থাকে, তবে ইজরায়েলের শেয়ারবাজারে ব্যাপক পতন হতে পারে।

হাসপাতালে হামলা, অনেকে আহত

ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রভাব শুধু স্টক এক্সচেঞ্জে সীমাবদ্ধ থাকেনি। আল জাজিরা জানিয়েছে যে ইরানের একটি ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিবের একটি হাসপাতালকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে। এই হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। হাসপাতালের আশেপাশের এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত আহতদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে, তবে হামলার তীব্রতা বিবেচনা করে ত্রাণ কাজ চালাতে সমস্যা হচ্ছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, “হঠাৎ একটি বিকট বিস্ফোরণ হয়, এবং চারপাশে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন চিৎকার করছিল, এবং সবাই নিজেদের জীবন বাঁচাতে দৌড়াচ্ছিল।” এই হামলা ইজরায়েলের জনগণের মধ্যে ক্ষোভ এবং ভয় উভয়ই সৃষ্টি করেছে।

ইজরায়েলের পাল্টা হামলা, ইরানের পারমাণবিক সাইটগুলো নিশানায়

ইরানের হামলার পর ইজরায়েলও জবাব দিয়েছে। রয়টার্সের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইজরায়েল ইরানের বেশ কয়েকটি ঘাঁটিতে আকাশপথে এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে ইরানের পারমাণবিক সাইটগুলোও অন্তর্ভুক্ত। ইজরায়েলের দাবি, এই হামলাগুলোতে ইরানের সামরিক শক্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত এক সপ্তাহে ইজরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বড় অভিযান চালিয়েছে। এই হামলাগুলোতে ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডাররা নিহত হয়েছেন এবং শত শত মানুষ হতাহত হয়েছেন। ইজরায়েল বলছে যে এই হামলাগুলো ইরানের পারমাণবিক আকাঙ্ক্ষাকে দুর্বল করার জন্য প্রয়োজনীয় ছিল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *