ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে চলা যুদ্ধ এখন দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করেছে। এর মধ্যেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেইকে ক্ষমতা থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। স্বয়ং তার পরিবার থেকেই আয়াতুল্লাহকে অপসারণের দাবি উঠতে শুরু করেছে। ফ্রান্সে বসবাসরত খামেনেইয়ের নির্বাসিত ভাগ্নে মাহমুদ মোরদখানি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, তিনি যুদ্ধের পক্ষে নন, তবে তার বিশ্বাস, ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের সমাপ্তিই প্রকৃত শান্তির পথ।

খামেনেইয়ের ভাগ্নে যা বললেন
মোরদখানি বলেছেন, “এই শাসনকে নির্মূল করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তা জরুরি। এখন যখন আমরা এই পর্যায়ে পৌঁছেছি, তখন এটি করা উচিত।” ১৯৮৬ সালে ইরান ত্যাগ করা মোরদখানি তার চাচার স্বৈরাচারী শাসনের কট্টর সমালোচক। তিনি রয়টার্সকে বলেছেন যে ইজরায়েলের সঙ্গে সামরিক সংঘাত দুর্ভাগ্যজনক, তবে এমন একটি ব্যবস্থায় এটি অনিবার্য যা নমনীয় নয় এবং সংস্কারকে গ্রহণ করে না। তিনি আরও বলেন, “আমার খুব দুঃখ হচ্ছে যে পরিস্থিতি এই পর্যায়ে পৌঁছেছে… কিন্তু খামেনেইয়ের হত্যাকাণ্ড কি সঙ্গে সঙ্গেই শাসনের অবসান ঘটাবে? এটি একটি ভিন্ন প্রশ্ন।” ইরানে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের কারণে মোরদখানি তার জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না, তবে তার বিশ্বাস, “অনেক ইরানিই শাসনের দুর্বলতার লক্ষণ দেখে খুশি।” তিনি যোগ করেন, “যত দ্রুত এটি শেষ হয়, তত ভালো। ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের অবসানের সঙ্গেই এর শেষ হওয়া উচিত। অন্যথায় এটি একটি অর্থহীন পরাজয় হবে এবং আমি এখনও বিশ্বাস করি যে শাসন প্রতিশোধ নেবে।”

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা এবং রেজা পাহলভীর আহ্বান
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সোশ্যাল মিডিয়ায় ইরানের “নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ”-এর দাবি জানিয়ে খামেনেইয়ের হত্যার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তার সহযোগীদের মতে, ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করার জন্য সামরিক বিকল্পগুলোকে অনুমোদন দিয়েছেন, যদিও চূড়ান্ত আদেশ এখনও দেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে, ইরানের প্রাক্তন শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভীর পুত্র রেজা পাহলভীও সোশ্যাল মিডিয়ায় শাসন পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন যে খামেনেই “একটি ভীতু ইঁদুরের মতো মাটির নিচে লুকিয়ে আছেন এবং ইসলামিক প্রজাতন্ত্র তার শেষের দিকে।” তিনি আরও বলেন, “ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের শেষ এসে গেছে। যা শুরু হয়েছে, তা এখন আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল, এবং আমরা ইতিহাসের এই কঠিন মোড়টি একসঙ্গে পার করব। খামেনেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন। ৪৬ বছর ধরে ইরানি জনগণের বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধের অবসান এই শাসনের অবসানের সঙ্গেই হবে।”