ইজরায়েলের অর্থনীতিতে যুদ্ধের আঘাত, খরচ লাগামহীন, সরকারি কোষাগার শূন্য হওয়ার পথে

ইজরায়েলের অর্থনীতিতে যুদ্ধের আঘাত, খরচ লাগামহীন, সরকারি কোষাগার শূন্য হওয়ার পথে

বিজনেস ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে (Middle East) চলমান ইরান-ইজরায়েল (Iran-Israel) সংঘাত এখন কেবল সামরিক সংঘর্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, এটি একটি গুরুতর অর্থনৈতিক যুদ্ধে রূপান্তরিত হয়েছে। ইজরায়েল প্রতিদিন প্রায় ৬৩ বিলিয়ন টাকা (৭২৫ মিলিয়ন ডলার) খরচ করছে, যার ফলে এর অর্থনীতির (Economy) উপর ব্যাপক চাপ পড়ছে এবং সরকারি কোষাগার (Government Treasury) দ্রুত খালি হয়ে যাচ্ছে।

এই তথ্য প্রকাশ করেছেন ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর (Israeli Army – IDF) প্রাক্তন আর্থিক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (রিজার্ভ) রিম অ্যামিনাখ (Reem Aminach)। তার মতে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রথম দুই দিনেই ইজরায়েল ১.৪৫ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১২,০০০ কোটি টাকা) খরচ করেছে, যার মধ্যে আক্রমণ এবং প্রতিরক্ষা উভয় খরচই অন্তর্ভুক্ত।

খরচ বাড়তে পারে
ইজরায়েল ইরানের উপর যে প্রথম হামলা চালিয়েছিল, তাতে বিমান উড়ান এবং অস্ত্র ব্যবহারের খরচ ছিল ৫৯৩ মিলিয়ন ডলার। বাকি অর্থ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা (Missile Defense Systems) এবং রিজার্ভ সৈনিকদের (Reserve Soldiers) ডাকার জন্য ব্যয় হয়েছে। অ্যামিনাখ আরও বলেছেন যে, এটি কেবল প্রত্যক্ষ খরচ। পরোক্ষ খরচ, যেমন জিডিপি-র (GDP) উপর প্রভাব এখনও পরিমাপ করা যায়নি। আসল বিল তখনই জানা যাবে যখন নাগরিক সম্পত্তির ক্ষতি (Damage to Civilian Property) এবং কাজের হ্রাস (Loss of Work) এর মতো খরচগুলো যোগ করা হবে।

অর্থনীতির উপর খারাপ প্রভাব
যুদ্ধের কারণে ইজরায়েলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির (Economic Growth) প্রত্যাশা কমে গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় (Finance Ministry) ইতিমধ্যেই এই বছরের জন্য জিডিপি-র ৪.৯% ঘাটতি (Deficit) নির্ধারণ করেছিল। এটি প্রায় ২৭.৬ বিলিয়ন ডলার। দেশের বাজেটে (Budget) জরুরি অবস্থার জন্য কিছু অর্থ রাখা হয়েছিল, কিন্তু তা বেশিরভাগই গাজা যুদ্ধে (Gaza War) খরচ হয়ে গেছে। এখন ইরানের সাথে চলমান যুদ্ধের জন্য আলাদা করে কোনো ব্যবস্থা নেই।

এই যুদ্ধের কারণে মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের জন্য প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪.৩% থেকে কমিয়ে ৩.৬% করেছে। এর অর্থ হলো, ইজরায়েলের অর্থনীতি আগে যতটা দ্রুত বাড়বে বলে আশা করা হয়েছিল, এখন ততটা দ্রুত বাড়বে না।

বিশ্বেও ধাক্কা
এই যুদ্ধের প্রভাব শুধু ইজরায়েল-ইরানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ১৩ই জুনের পর থেকে অপরিশোধিত তেলের (Crude Oil) দাম ৬৪-৬৫ ডলার থেকে বেড়ে ৭৪-৭৫ ডলার প্রতি ব্যারেল হয়েছে। ভারত (India)-এর মতো তেল আমদানিকারক দেশগুলোর জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা। রেটিং এজেন্সি ICRA এর মতে, যদি তেলের দাম গড়ে ১০ ডলার বাড়ে, তাহলে ভারতকে ১৩-১৪ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত বোঝা বহন করতে হতে পারে। এর ফলে চলতি হিসাবের ঘাটতিও (Current Account Deficit) ০.৩% পর্যন্ত বাড়তে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *